বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৩

অষ্টম সাক্ষীরও চুরির মামলায় সাজা

মেহেদী হাসান, ১/১/২০১২
আজ আদালতে সপ্তম এবং অষ্টম এ দুজন  সাক্ষীর জেরা শেষ হয় ।  চুরির মামলায়  তিন মাসের সাজা হয় অষ্টম সাক্ষী মোস্তফা হাওলাদার । আর সপ্তম সাক্ষীর  শ্বাশুড়ী   ভিক্ষা করে।

জেরায় অষ্টম  সাক্ষী মোস্তফা হাওলাদার  স্বীকার করেন চুরির মামলায় তার সাজা হয়। তবে সাজা এখন বহাল নেই। জজকোর্টে আপিলের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে।
পিরোজপুর দ্বিতীয় শ্রেণীর মেজিস্ট্রেট  আদালত সাক্ষী মোস্তফা হাওলাদারকে  তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। জেরার সময় সাক্ষী  মোস্তফা হাওলাদার বলেন ১৯৭১ সালে তিনি পারেরহাট বাজারে ছোলামুড়ি  বিক্রি করতেন ফেরি করে।

অন্যদিকে সপ্তম সাক্ষী মফিজ উদ্দিন হাওলাদারকে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা প্রশ্ন করেন আপনার  দ্বিতীয় স্ত্রী  এবং  শ্বাশুড়ী ভিক্ষা করে? তখন সাক্ষী মফিজ উদ্দিন হাওলাদার বলেন, শ্বাশুড়ী হয়ত ভিক্তা করে । স্ত্রী করেনা। মফিজউদ্দিন গত গত ২৯ ডিসেম্বর আদালতে জবানবন্দী দেন। ঐদিনই তার জেরা শুরু হয়।  আজ দুপুরে  তার জেরা শেষ  হয়।  জেরায় মফিজ উদ্দিন জানান, তার কোন সময়  কোন সহায় সম্পত্তি ছিলনা। তার শ্বশুর তাকে ২ কাঠা জমি দিয়েছিলেন।  শ্বশুর বাড়িতেই ছোট্ট একটি  ঘরে তিনি থাকতেন। এরপর তিনি আবার দ্বিতীয়  বিয়ে করেন এবং  তার দ্বিতীয়  শ্বাশুড়ী ভিক্ষা করে বলে স্বীকার করেছেন।

সপ্তম সাক্ষী মফিজ উদ্দিন ১৯৭১ সালের ৮ মে থেকে     শুরু করে  পারেরহাটে অগ্নিসযোগ লুটপাট, হত্যাসহ মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। কিন্তু মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা তাকে প্রশ্ন করেন মে মাসের আগের মাসের নাম বলতে পারবেন? তখন সাক্ষী জবাব দেন ‘বলতে পারবনা’।

অষ্টম সাক্ষী  মোস্তফা হাওলাদারকে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা প্রশ্ন করেন আপনি  তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জবানবন্দী দিয়েছেন কবে । সাক্ষী জবাব দেন ‘১৮/৮/২০১০’। তখন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা  আবার প্রশ্ন করেন  ১৮/৮/২০১০ তারিখটা যেভাবে বললেন সেভাবে গতকালের তারিখটা বলতে পারবেন? সাক্ষী জবাব দেন ‘বলতে পারবনা’ বলে।  মোস্তফা হাওলাদার জবানবন্দীতে বলেন, আমি ১৯৭১ সালে পারেরহাট বাজারে বুট মুরি  বিক্রি করতাম।

মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত আটজন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচ জনের বিরুদ্ধেই চুরির অভিযোগ রয়েছে। চারজনের বিরুদ্ধে  চুরির মামলা হয়েছে।  অপর আরেক জনের বিরুদ্ধে চুরির  ঘটনা সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা করা হয়েছে। এছাড়া তিনজন সাক্ষী আদালতে স্বীকার করেছেন তারা  মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত  করার জন্য স্থানীয় এমপি তাদের ডিও লেটার দিয়েছেন মামলা শুরু হবার পরে।

মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম, মনজুর রহমাদ আনছারী, কফিল উদ্দিন চৌধুরী সাক্ষীকে জেরা করেন। তাদের সহায়তা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাজুল ইসলাম, ফরিদ আহমদ, ব্যারিস্টার তানভির আল আমিন, মুন্সী আহসান কবির প্রমুখ।

সপ্তম সাক্ষী মফিজ উদ্দিনের  জেরা:
আইনজীবী: আপনি পারেরহাটের যে ঘটনার  বর্ণনা দিলেন তার তারিখ কত বলেছিলেন?
সাক্ষী: ৮ মে।
আইনজীবী: এটা কি ইংরেজি না বাংলা মাসের তারিখ?
সাক্ষী:  ইংরেজি।
আইনজীবী: মে মাসের আগের মাস কোনটা বলতে পারবেন?
সাক্ষী: বলতে পারবনা।
আইনজীবী:  মে মাস কতদিনের তা  বলতে পারবেন?
সাক্ষী : অনুমান ২৯ দিনের।
আইনজীবী: আপনার মেয়ের নাম চন্দ্রবান?
সাক্ষী: হ্যা
আইনজীবী: এই মামলায় আপনি সাক্ষী হবার বিনিময়ে আপনার মেয়েকে পারেরহাট বাজারে আশ্রয় কেন্দ্রে একটি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সাক্ষী: ঐ ঘরতো তার জামাই বুঝে নিয়েছে।
আইনজীবী: আপনার দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম ফরিদা বেগম এবং শ্বাশুড়ী সালেহা বেগম?
সাক্ষী: সত্য।
আইনজীবী:  তারা উভয়ে পারেরহাটে ভিক্ষা করে?
সাক্ষী: শ্বাশুড়ী হয়ত করতে পারে। স্ত্রী করেনা।
আইনজীবী: আপনাকে ধরে নিয়ে রাজাকার ক্যাম্পে অত্যাচার নির্যাতন করে জখম করার কথা বললেন।  আপনি  পরে কোন  ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: আপনাকে নির্যাতনের পরে আপনার স্ত্রী, শ্বাশড়ী, ভায়রা বা শ্যালিকা দেখা করেছিল?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: তাদের সাথে কবে দেখা হয় এরপর?
সাক্ষী: ঐ ঘটনার ২/৩ দিন পর সুন্দরবন যাবার সময়।
আইনজীবী: ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসার পর রাজাকাররা আপনার শ্বশুরবাড়ি এসে আপনাকে খোঁজ করেছে বা তাদের ঘরে আগুন দিয়েছিল?
সাক্ষী: আমার ঘরতো ছিলনা। শ্বশুরবাড়িতে থাকতাম।  তাদের ঘর ভাঙ্গেনি। আমি ছোট একটা খ্যারের ঘরে থাকতাম। তা ভেঙ্গে চুরে চুরমার করেছে।
আইনজীবী: আপনি সুন্দরবনে কতদিন ছিলেন?
সাক্ষী: যাবার পর থেকে স্বাধীনতা অর্জন পরত।
আইনজীবী: কোন ক্যাম্পে ছিলেন?
সাক্ষী: রউজুদ্দীনের সাথে থেকে তাদের পরিবারে আউগানি পাউছানির কাজ করতাম। পরে  জিয়া মেয়ার  (মেজর জিয়উদ্দিন) সাথে থেকে  খায় খেদমত  করেছি।
আইনজীবী: জিয়া মেয়ার ক্যাম্পে কতদিন ছিলেন?
সাক্ষী:  এক দেড় মাস।
আইনজীবী: যেসব মুক্তিযোদ্ধার  খায় খেদমত করলেন তাদের ১০/২০ জনের নাম বলতে পারবেন?
সাক্ষী:  আমজাদ হোসেন, আলমগীর মেয়া। আর মনে নেই।
আইনজীবী: মানিক পসারী ২০০৯ সালে পিরোজপুর কোর্টে ঘর পোড়ানোর যে মামলা করেছেন তাতে আপনাকে সাক্ষী করা হয়নি। কারণ আপনি ঐ ঘর পোড়ানো বিষয়ে কিছু জানতেননা।
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী: আপনি যে দেলু শিকদারের কথা বলেছেন তার পিতার নাম রসুল শিকদার। গ্রাম ছিলা শিকদার বাদী। পিরোজপুর সদর।
সাক্ষী: সত্য নয় ভুয়া কথা।
আইনজীবী: এই দেলু শিকদারের পিতা রসুল শিকদার পারেরহাট বাজার রাজাকার ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিল।
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী: আবেদ আলী হোসেন এক মুক্তিযোদ্ধা দেলু শিকদারের পিতাকে স্বাধীনতার পর গুলি করে হত্যা করে জানেন?
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী: আরেক কুখ্যাত রাজাকার দেলোয়ার হোসেন মল্লিক স্বাধীনতার পর জেলে যায়।
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী: নগদ টাকা, বয়স্ক ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম লেখানো, মেয়েকে আশ্রয় কেন্দ্র দেয়া এবং আরো অনেক সুবিধা পাবার বিনিময়ে আপনি মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীর বিরুদ্ধে  এ মিথ্যা সাক্ষ্য দিচ্ছেন?
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী: রাজাকার দেলোয়ার হোসেন শিকদার ও দেলোয়ার হোসেন মল্লিকের স্থলে অন্যায়ভাবে মাওলানা সাঈদীর নাম বব্যহার করছেন।
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী: আপনি  পুর্বে যে জবানবন্দী দিয়েছেন  তাতে ৮ মে সকালে  আপনি এবং ইব্রাহীম সকালে গরু মষি চাড়াতে যাওয়া, ধোয়া দেখে  বাড়িতে আসা, আপনাদের দড়ি দিয়ে বাঁধা, কেরোসিন ঢেলে ঘরে আগুন লাগানো, আপনাদের  এক দড়িতে বেঁেধ পারেরহাট বাাজরে নিয়ে যাওয়া, মারধোর করা, ইব্রাহীমকে গুলি করার শব্দ শোনা,  লাথি মেরে  লাশ নাদীতে ফেলে দিতে দেখার কথা বলেননি। 
সাক্ষী: বলেছি।

অষ্টম সাক্ষীর জবানবন্দী:
মো: মোস্তফা হাওলাদার, বয়স ৫৬ গতকাল মাওলানা দেলোয়ার  হোসেন সাঈদীর বিরুদ্ধে  আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন।
মোস্তফা হাওলাদার  জবানবন্দী দিতে গিয়ে বলেন, আমি ১৯৭১ সালে পারেরহাট বাজারে বুটমুড়ি ফেরি করে বিক্রি করতাম।  মে মাসের সাত তারিখ  শান্তি কমিটির দেলোয়ার  শিকদার, দানেশ আলী মোল্লা, মোসলেম মাওলানা এরা  বাজারের উত্তর মাথায় রিক্সা স্ট্যান্ডের কাছে যায়। কিছুক্ষন পর ২৬টি  রিক্সায় ৫২ জন পাক আর্মি আসে। পাক আর্মি নামার পর তারা দেলোয়ার শিকদার, মোসলেম মাওলানা,  দানেশ মোল্লা, সেকেন্দার শিকদার এদের জিজ্ঞসা করে বাজারের  অবস্থা কি । তারপর শান্তি কমিটির লোকজন পাক আর্মিদের হিন্দু এবং নৌকা মার্কার লোকজনের দোকান, ঘরবাড়ি দেখিয়ে দেয়।    এরপর তারা বাজারে ঢোকে। দেলোয়ার শিকাদর  পাক আর্মিদের  ঘরবাড়ি দেখিয়ে দেয়। আর লুটপাটের নির্দেশ দেয়। অর্মির অর্ডারে শুরু হয় লুটপাট। ৩০/৩৫ টি ঘরে তারা লুটপাট করে। দেলোয়ার শিকদার,  মোসলেম মাওলানা, সেকেন্দার শিকদার, খলিল মৌলভীসহ শান্তি কমিটির অন্যান্যরা লুটপাট করে।  ঘন্টা দেড়েক লুটপাট করে চলে যায় পাক আর্মি। এরপর পুরাদমে লুটপাট করে শান্তি কমিটির লোকেরা।

এরপর ১৫/১৬ জন আর্মি  এবং ৩০/৩৫ জন রাজাকার বাহিনীর লোকেরা বাদুরা গ্রামে যায়। সেখানে নুরু খার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। নুরু খার ঘর দেখিয়ে দেয় দেলোয়ার শিকদার। দেলোয়ার শিকদার গত ১৫ বছর থেকে দেলোয়ার হোসেন সাঈদী হয়েছে। আমরা খালের ওপারে বসে ধোয়া এবং আগুন দেখতে পাই নুরু খার ঘরের। আগুন আর ধোয়া দেখার পর দেখি  লুটপাট করে লোকজন রইজুদ্দীন কোম্পানীর বাড়ির দিকে যাচ্ছে। সেখানে তারা ২ টি ঘরে  লুটপাট করে আগুন দেয়। সইজুদ্দীন পসারীর বাড়িতে ৫টি ঘরে লুটপাট করে  আগুন  ধরিয়ে দেয়।
রইজুদ্দীন সইজুদ্দীন পসারীর বাড়িতে দুজন লোক থাকত মফিজ উদ্দিন এবং ইব্রাহীম কুট্টি নামে। তারা চরে গিয়েছিল গরু চড়াতে।
তারা আগুন দেখে দৌড়ে আসে। এসময় দেলোয়ার শিকদার তাদের চাইপপা ধরে এবং মফিজ উবরাইয়া পরে যায়।  পাক আর্মি ধরে ইব্রাহিম কুট্টিকে। তাদের এক দাড়িতে বেঁধে পারেরহাট বাজারে নিয়ে যায়। তারপর মফিজকে পারেরহাট রাজাকার ক্যাম্পে আর ইব্রাহিমকে নেয়া হয় থানার ঘাটের দিকে। তারপর গুলির শব্দ শুনি। থানার ঘাটের কাছে ব্রিজের গোড়ায় ইব্রাহিম কুট্টিকে গুলি করে লাথি মেরে পানিতে ফেলে দেয়।

অষ্টম সাক্ষীর জেরা:
আইনজীবী: আব্দুর রশিদ বয়াতী, পিতা আজহার আলী, গ্রাম হোগলাবুনিয়া। একে চেনেন?
সাক্ষী: চিনি।
আইনজীবী: তার দায়ের করা চুরির মামলায় আপনার সাজা হয়  এবং সে সাজা এখনো বহাল আছে?
সাক্ষী: সাজা বহাল নেই। মিট মীমাংসা হয়েছে।

আইনজীবী: কিভাবে সাজা বাতলি হল।
আইনজীবী: জজকোর্টে আপীল করার পর মিট মীমাংসার মাধ্যমে  বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে।
আইনজীবী: আপনি ১৯৭১ সালের কতদিন আগে থেকে ছোলামুড়ি বিক্রি করতেন?
সাক্ষী: ২/১ বছর আগে থেকে স্বাধীনতার পাঁচ ছয় বছর পর্যন্ত বিক্রি করেছি।
আইনজীবী: ছোলামুড়ির কিভাবে বিক্রি করতেন?
সাক্ষী: বড় একটি থালায় নিয়ে ফেরি করে বিক্রি করতাম।
আইনজীবী: পারেরহাটে তখন দোকানের সংখ্যা কত ছিল অনুমান?
সাক্ষী: দুই/তিনশ।
আইনজীবী: ঐ সময় পাারেরহাটের কয়েকজন বড় ব্যবসায়ীর নাম বলতে পারবেন?
সাক্ষী: নারায়ন সাহা, গৌরাঙ্গ সাহা।
আইনজীবী: আর কারো নাম?
সাক্ষী: এ দুজনই সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ী ছিলেন।
আইনজীবী: পাকিস্তান আর্মি আসার আগ পর্যন্ত পারেরহাট বাজার মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির নিয়ন্ত্রনে ছিল?
সাক্ষী:  না।
আইনজীবী: রাজলক্ষী স্কুলে ক্যাম্প হয় আর্মি আসার  কতদিন আগে।
সাক্ষী: আর্মি আসার পরে ক্যাম্প হয় আগে নয়।
আইনজীবী: রাজাকার ক্যাম্পও পরে হয়?
সাক্ষী: রাজাকার ক্যাম্প আগে হয়।
আইনজীবী: কতদিন আগে হয়?
সাক্ষী: ১৫ দিন, এক মাস আগে হয়।
আইনজীবী: ক্যাম্পে কতজন রাজাকার ছিল?
সাক্ষী: ২০/২৫ জন।
আইনজীবী: পারেরহাট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কে ছিল?
সাক্ষী: আমজাদ গাজী
আইনজীবী: আপনার এলাকায় মেম্বার কে ছিলেন।
সাক্ষী: গন্ডগোলের সময় মেম্বার ছিলেন রমনীবালা।
আইনজীবী: দানেস মোল্লার বাড়ি কোথায় বলতে পারবেন?
সাক্ষী নলবুনিয়া।
আইনজীবী: তিনি কি করতেন?
সাক্ষী: আগে মাস্টারি করত।
আইনজীবী: সেকেন্দার শিকদারের বাড়ি কোথায়?
সাক্ষী: হোগলাবুনিয়া।
আইনজীবী: সে কি করত?
সাক্ষী: সে খুব সৌখিন ছিল। বাজারে তার একটি দোকান ছিল। সেখানে বসত। বাজারে যাতায়ত করত। তিনি খুব ভাল মানুষ ছিলেন।
আইনজীবী: ইব্রাহিম কুট্টিকে ধরে নিয়ে যাবার  কতদিন  আগে থেকে চেনেন?
সাক্ষী: ২/১ বছর।
আইনজীবী: সইজুদ্দীন পসারীদের বাড়িতে সে কতদিন  ধরে  কাজ করত?
সাক্ষী: শুনেছি তার বাড়িতে বহু বছর ধরে কাজ করত।
আইনজীবী: ইব্রাহীমের বাড়ি কোথায় বলতে পারবেন?
সাক্ষী: বাদুরা।
আইনজীবী:
আইনজীবী: তার স্ত্রীর নাম জানেন?
সাক্ষী: জানা নেই।
আইনজীবী: তার কোন  ছেলে মেয়ের খবর  জানেন?
সাক্ষী: আমার খোঁজ খবর নেয়ার দরকার নেই।
আইনজীবী: তার স্ত্রী কোথায় থাকে, কি করে তাও জানেননা?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: ইব্রাহিমের লাশ দাফন টাফন হয়েছিল কিনা জানেন?
সাক্ষী: কে দাফন করেছে জানিনা।  শুনেছি তার লাশ পাওয়া যায়নি।
আইনজীবী: মফিজ উদ্দিনকে কতদিন ধরে  চিনতেন ?
সাক্ষী: ২/১ বছর আগে থেকে।
আইনজীবী: আপনি বললেন সইজুদ্দীনের বাড়িতে ধোয়া দেখে ইব্রাহিম এবং মফিজ বাড়ির দিকে দৌড়ে আসল। আপনি কি তাদের দৌড়ে আসতে দেখেছিলেন?
সাক্ষী: না ।  শুনেছি। শুনেছি আর্মি আসার খবর পেয়ে তারা দৌড়ে আসে।
আইনজীবী: সইজুদ্দীনের গোলায় কতমন ধান ধরত বলতে পারবেন? সাক্ষী: জানা নেই।
আইনজীবী: গোলাটি পোড়ার আগে কখনো দেখেছেন?
সাক্ষী: হ্যা।
আইনজীবী: দৈর্ঘ্যে প্রস্থে কত হবে সেটি?
সাক্ষী: বলতে পারবনা। অনেক বড়।
আইনজীবী: আপনি পোড়ার স্থানে ঐদিন যাননি।
সাক্ষী: পরের দিন গিয়েছি।
আইনজীবী:  এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে কবে জবানবন্দী দিলেন আপনি?
সাক্ষী: ১৮/৮/২০১০।
আইনজীবী: ১৮/৮/২০১০ তারিখটা যেভাবে বললেন সেভাবে গতকালের তারিখটা বলতে পারবেন?
সাক্ষী: না।
   
এরপর অষ্টম সাক্ষীর জেরা আজ অসমাপ্ত রেখে আদালত মুলতবি করা হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন