বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৩

“তাদের ভুলে আসামীর ফাঁসি হলে তখন কি হবে”// আবারো সময়মত সাক্ষী হাজিরে ব্যর্থ প্রসিকিউশন

মেহেদী হাসান, ২৬/১/২০১২
আজ ট্রাইব্যুনালে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে  দীর্ঘ বিতর্ক চলে। এর মধ্যে একটি হল রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের তালিকা। মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীদের অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষীদের যে তালিকা তাদেরকে দিয়েছেন তার বাইরে তারা সাক্ষী হাজির করছেন। রাষ্ট্রপক্ষ  কর্তৃক  সরবরাহকৃত একাধিক তালিকার কোনটি অনুসরন করা হচ্ছে তা তারা বুঝতে পারছেননা।  সাক্ষীদের তালিকা নিয়ে ভুলের কথা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা স্বীকার করেন আদালতে। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক  বলেন তারাও ট্রাইব্যুনালে নতুন।  ট্রাইব্যুনালের আইন, আসামী পক্ষ, প্রসিকিউশন সবই নতুন। সাঈদী সাহেবের প্রথম বিচার চলছে  এ ট্রাইব্যুনালে।  তাই কেউ মারাত্মকভাবে অবিচারের (প্রিজুডিশ)  শিকার না হলে ছোটখাট ভুল আমরা ওভারলুক করছি।

তখন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী তাজুল ইসলাম আদালতকে বলেন, তাদের ( প্রসিকিউশন)  ভুল ক্ষমা সুন্দর  দৃষ্টিতে দেখতে গিয়ে যদি আমার আসামীর ফাঁসি হয়ে যায় তখন কি হবে। তাদের ভুল ক্ষমা সুন্দর  দৃষ্টিতে দেখতে গিয়ে আমার আসামীর ফাঁসি হলে  তখন আর তা আমরা  ক্ষমা  সুন্দর  দৃষ্টিতে দেখতে পারিনা।

আবারো সময়মত সাক্ষী  হাজিরে ব্যর্থ প্রসিকিউশন
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে  আবারো সময়মত সাক্ষী হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের  আইনজীবীরা। গতকাল সকালে তারা মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে  সাক্ষী হাজির করতে পারেননি। এতে আবারো আদালত তাদের ওপর  ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সকালে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে রাষ্ট্রপক্ষের  আইনজীবী জানান,  আজ সকালে সাক্ষী পৌছেছে। আসতে একটু অসুবিধা হয়েছে। দুইটায় আমরা নতুন সাক্ষী আনতে পারব।
তখন  ট্রাইব্যুনালের  চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক  ক্ষোভের সাথে বলেন, আপনাদের এটা একটি নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সাক্ষী নেই, জ্যামে পড়ছে, আসছে আসবে  অজুহাত দেখাচ্ছেন। সাক্ষী না থাকলে আমাদের তো করার কিছু নেই। আমরা হয় কোর্ট রুমে বসে থাকব না হয় চেম্বারে বসে থাকব।

দুইটার সময় তারা জব্দ তালিকার একজন সাক্ষী  হাজির করেন। এ সাক্ষী কর্তৃক জব্দ তালিকা সনাক্তকরন নিয়ে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীদের আপত্তির প্রেক্ষিতে দীর্ঘ বিতর্ক চলে আদালতে।

এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার ১২টায় ১৪তম সাক্ষী আব্দুল  হালিম বাবুলের জবানবন্দী  এবং জেরা শেষ হয়। এরপর সাক্ষী দেয়ার কথা ছিল মধুসূদন ঘরামীর। কিন্তু তাকে ঐদিন আনা যায়নি অসুস্থতার কারনে। পরের দিন বুধবারও রাষ্ট্রপক্ষ তাকে হাজির করতে ব্যর্থ হন।    এরপর আদালত  ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মাওলানা সাঈদীর  বিচার মুলতবী করেন।
পরপর তিন বার ব্যর্থ হবার পর ঐ দিন  বেলা দুইটায় তারা নতুন সাক্ষী হাজির করেছিল। সেদিনও আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

সাক্ষীর তালিকা নিয়ে বিতর্ক: 
গত বুধবার মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা অভিযোগ করেন  তাদেরকে রাষ্ট্রপক্ষ   ৬৮ জন সাক্ষীদের যে তালিকা দিয়েছেন তার বাইরে সাক্ষী হাজির করা হয়েছে। কোন সাক্ষীর নাম আছে  জব্দ তালিকায় এবং কোন কোন সাক্ষীর  জবানবন্দী নেই।  রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সরবরাহ করা  সাক্ষীদের তিনটি তালিকা  বিষয়ে  জবাব দেয়ার জন্য আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের প্রস্তুতি নিয়ে আসতে বলেন গতকাল বৃহষ্পতিবার। সে অনুযায়ী গতকাল আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম আদালতের সামনে সাক্ষীর তালিক নিয়ে সমস্যার বিষয়টি তুলে ধরেন। তারা বলেন, তাদেরকে প্রথমে যে দুটি ভলিউম দেয়া হয়েছে  সাক্ষীদের  জবানবন্দী সমেত তাতে এক  জায়গায় ৭০ জন, এক জায়গায় ৩০ জন এবং আরেক স্থানে ৩৮ জন সাক্ষীর তালিকা রয়েছে। মোট ১৩৮ জন সাক্ষী। এর মধ্যে  ৭০ জন সাক্ষীর নাম রয়েছে সিজার লিস্ট তালিকায়। সিজার লিস্ট ছাড়া ৬৮  সাধারন সাক্ষী রয়েছে মোট ৬৮ জন। রাষ্ট্র পক্ষ থেকেও তাদেরকে ৬৮ জন সাক্ষীর  একটি তালিকা দেয়া হয়েছে। আমরা ধরে নিয়েছি এরাই সাধারন সাক্ষী  এবং তাদের বিষয়েই আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। অতিরিক্ত সাক্ষীদের এই তালিকা দেয়ার মানে হল আমরা এর বাইরে যাবনা। 

সাক্ষীর তালিকা নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, এরকম অনেক ভুল (রাষ্ট্রপক্ষের  আইনজীবীরা ) করেছে যা দরকার ছিলনা। আপনাদের   দুটি ভলিউম দেয়া হয়েছে। ঐ ভলিউমে  যেসব সাক্ষীর  জবানবন্দী আছে তাদের বিষয়ে আপনারা প্রস্তুতি নেন। এর বাইরে যাবেননা।

বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, আমি অনেক আগে থেকে একটি কথা আপনাদের বলেছি।  আমরা এই ট্রাইব্যুনালে নতুন। আইনও নতুন। ডিফেন্স নতুন । প্রসিকিউশনও নতুন।  প্রথম কেস হিসেবে সাঈদী সাহেবের বিচার চলছে। কিছু  ভুল ভ্রান্তি  হতে পারে। এটাই সাভাবিক। কেউ মারাত্মকভাবে অবিচারের (প্রিজুডিস) শিকার না হলে আমরা ছোটখাট ভুল ওভারলুক করছি।

বিচারপতি  একেএম জহির আহমেদ  রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, দুইটি ভলিউমের তালিকার বাইরে ৬৮ জনের তালিকা তাদেরকে কেন দিলেন তার জবাব দেন।   আসামী পক্ষকে যে দুইটা ভলিউম দেয়া হয়েছে তাতে সব সাক্ষীদের নাম রয়েছে। ১৩২ জনের নাম আছে। আমরা ঐ দুটি ভলিউমের ওপর ভিত্তি করে আসামীর বিরুদ্ধে  অভিযোগ  আমলে নিয়েছি। চার্জ  গঠন করেছি। এর বাইরে  কেন, কোন আইনের ভিত্তিতে  আসামী পক্ষকে ৬৮ জনের নতুন তালিকা দিলেন। আমাদেরকে কেন আপনারা বিব্রতকার অবস্থায় ফেলেন।
তখন রাষ্ট্রপক্ষের  আইনজীবী জেয়াদ আল মালুম বলেন, এটা নতুন কেস। আমরা কেউ জেনে আসিনি। জানাশোনার মধ্য দিয়ে শিখছি।

এর  এক পর্যায়ে জেয়াদ আল মালুম বলেন, সমস্যা হয়েছে গেছে মাই লর্ড আমার চেহারা। আমার নামেও সমস্যা।

তখন   বিচারপতি একেএম জহির আহমেদ বলেন, আমার প্রশ্নের জবাব কিন্তু পাইনি।
তখন জেয়াদ আল মালুম আবারো বলেন, ভুল হতে পারে। আমরা কখনো দাবি করিনি যে, আমরা ভুলের উর্ধ্বে।

তাদের ভুলে আসামীর ফাঁসি হলে তখন কি হবে?
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক এর এক পর্যায়ে আদালতকে বলেন, আপনারা তো চাননা যে, আমরা অবিচারের (প্রিজুডিস) শিকার  হই । তখন বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, কোন পক্ষ প্রিজুডিস হোক তা আমরা চাইনা। তখন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক  রাষ্ট্রপক্ষের  আইনজীবীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, তারা প্রিজুডিশ হলে কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু আমরা প্রিজুডিস হলে অনেক কিছু যায় আসে। কারন আমরা আসামী পক্ষ। আমরা ডকে আছি।

তাজুল ইসলাম আদালতকে বলেন, ভুল ভ্রান্তি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ভাল কথা। কিন্তু ওনাদের ভুলের কারনে.....  তাজুল ইসলাম  এ পর্যন্ত  বলার সাথে সাথে  বিচারপতি নিজামুল হক বলেন “কাউকে প্রিজুডিস না করে” । তাজুল ইসলাম তখন বলেন, হ্যা মাই লর্ড। এটাই হল  আসল কথা। তাদের ( প্রসিকিউশন)  ভুল ক্ষমা সুন্দর  দৃষ্টিতে দেখতে গিয়ে যদি আমার আসামীর ফাঁসি হয়ে যায় তখন কি হবে। তাদের ভুল ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে গিয়ে যদি  আমার আসামীর ফাঁসি হয় তখন আর তা আমরা  ক্ষমা  সুন্দর  দৃষ্টিতে দেখতে পারিনা।


জব্দ তালিকার সাক্ষীর জবানবন্দী
আমার নাম মো: রবিউল আনাম খান। বয়স ৪৪।
রাষ্ট্রপক্ষের  আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী তাকে প্রশ্ন করেন ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আপনি কোথায় কি করতেন তা আদালতকে বলেন ।
রবিউল  আনাম খান: ঐদিন আমি প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) কর্মরত ছিলাম ক্যাটালগার হিসেবে। ঐদিন  তদন্ত  কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন  খান ২০০১ সালের ৫ মার্চ তারিখের দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার পৃষ্ঠা ১ এবং ১১  সিজ করেন। জব্দ করা খবরের  হেডলাইন ছিল ‘একাত্তরের রাজাকার দেইল্লা এখন মাওলানা সাঈদী’। এই  জব্দনামায় আমার সাক্ষর আছে এবং জব্দকৃত পত্রিকাটি আমার জিম্মায় রাখা হয়।
বিচারপতি এ কে এম জহির আহমেদ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের প্রশ্ন করেন এটা কেন আনলেন। এটা তো ১৯৭১ সালের পত্রিকা নয়। ২০০১ সালের পত্রিকা।
তখন সৈয়দ হয়দার  আলী বলেন, এখানে ১৯৭১ সালের ঘটনার বর্ণনা আছে।

এরপর সিজার লিস্টোর সাক্ষী রবিউল আনাম বলেন, ২৬/৮/ ২০১০ তারিখেও আমি  পিআইবিতে একই পদে কর্মরত ছিলাম। ঐদিন ৪/১১/২০০৭ তারিখে প্রকাশিত ভোরের কাগজ পত্রিকা সিজ করেন  তদন্ত কর্মকর্তা। ‘একাত্তরের রাজাকারণামা-৭’ শীর্ষক খবরের পৃষ্ঠা ১ এবং ২  সিজ করে পত্রিকাটি আমার জিম্মায় রাখা হয়। জব্দনামায় আমার সাক্ষর আছে।

সিজার লিস্ট সাক্ষী কর্তৃক সনাক্তকরন নিয়ে আপত্তি
মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম আপত্তি উত্থাপন করে বলেন, যিনি ঐ প্রতিবেদন লিখেছেন এবং যিনি পত্রিকার কর্তৃপক্ষ তিনিই কেবল এটি উপস্থাপন  করতে পারেন।  এই সাক্ষী তো ঐ রিপোর্টের মালিক নন। রিপোর্টার বা সম্পাদক না থাকলে  অন্য কোন কর্তৃপক্ষ করতে পারবেন।  মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের এ্যাক্ট এবং রুলস পড়ে শোনান।
ট্রাইব্যুনাল তখন এ বিষয়ক ৫৪ নং রুল  উল্লেখ করে  বলেন, ঐ রুল আমরা করেছিলাম ভাল উদ্দেশ্য নিয়েই এবং ন্যায় বিচারের কথা ভেবেই। কেউ বই নিয়ে আসতে পারে, কেউ  হাতে লেখা কোন চিঠি বা অন্য কোন লেখা নিয়ে আসেন  সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দরকার হবে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট অন্যান্য রুলস এবং আইনের আরো কিছু ধারা মিলিয়ে দেখলে  সমস্যা  থাকার কথা নয়।

মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা   যুক্তি উপস্থাপন করে বলেন, আপনারা ভাল উদ্দেশে করেছেন সেটা ঠিক আছে কিন্তু এখনতো রুলের বাইরে আপনারা যেতে পারবেননা। তাছাড়া এই আইনে বিচারের ভার যদি অন্য কারো হাতে পরে তখন  তার মনোভাব একই নাও থাকতে পারে। যেমন ১৯৭৩ সালের আইন করা হয়েছিল   যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত পাকিস্তানী সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের জন্য। কিন্তু সেই আইন দিয়ে এখন  এদেশের লোকদের বিচার কাজ চলছে।  তেমনিভাবে  আপনারা এক উদ্দেশে রুল করলেও অন্য কেউ যে অন্য উদ্দেশ্যে এর প্রয়োগ করবেনা তার নিশ্চয়তা কোথায়।

ট্রাইব্যুনাল বারবার মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীদের বলেন,  আপনাদের আশঙ্কা আমরা বুঝতে পেরেছি। আপনারা যাতে প্রিজুডিস না হন এবং আপনাদের যাতে সমস্যা না হয় সেটি আমরা দেখব। কারণ রুল আমরা বানিয়েছি আইনের ভিত্তিতে। এটি আমাদের হাতে। প্রয়োজনে আমরা এ বিষয়ে রিথিংক করতে পারি।

কিন্তু  তারপরও মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা আপত্তি উত্থাপন অব্যাহত রাখায় এক পর্যায়ে  ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক  ক্ষোভের সাথে বলেন,   রুলস অমিটেড। 

তখন তাজুল ইসলাম বলেন, তাদের (রাষ্ট্রপক্ষ) সমস্যা হলে এবং  তাদের সুবিধার জন্য  যদি রুলস  বাতিল করা হয় তাহলে এ রুলের মূল্য থাকল কোথায়।

এপর্যায়ে  বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, আমরা রুলস নিয়ে বসব। যদি দেখি এটা রেখে  সামনে আগানো যায় তাহলে আগাব। তা নাহলে সংশোধন করব।

মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন রুল ৫৪ তে যদি আপনারা উল্লেখ করেন এটি শুধুমাত্র হাতে লেখার ক্ষেত্রে  তাহলে আমাদের কোন আপত্তি থাকবেনা।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন