মেহেদী হাসান, ৮/১২/২০১১
আজ প্রথম সাক্ষী মাহবুবুল আলম হাওলাদারের জেরা শুরু হবার কথা ছিল। নিয়ম অনুযায়ী একজন সাক্ষীর জেরা না করে আরেক সাক্ষীর জবানবন্দী নেয়া যায়না। কিন্তু মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী সময় প্রার্থনা করায় প্রথম সাক্ষীর জেরা স্থগিত রেখে দ্বিতীয় সাক্ষীর জবানবন্দী নেয়া হয়। তবে নিয়ম রক্ষার খাতিরে মাহবুবুল আলমকে গতকাল দুয়েকটি প্রশ্ন করা হয়েছিল জেরার অংশ হিসেবে।
যাহোক আজ মাওলানা দেলাওয়ার সাঈদীর বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সাক্ষী রুহুল আমীন নবীন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্যে তিনি মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে পিরোজপুর পারের হাট বাজারে লুটপাট, জোর করে হিন্দুদের মুসলমান বানানো এবং পাক আর্মির বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনেন।
সাক্ষ্যের শুরুতে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর পেক্ষাপট বর্ণনা করে রুহুল আমিন নবীন বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রসদ কিনতে জুন মাসে বৃহষ্পতিবার হাটের দিন পারের হাট বাজারে যাই। এসময় লুঙ্গি ও পাঞ্জাবী পরিহিত তৎকালীন দেলাওয়ার হোসাইন শিকদার (বর্তমানে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী) বা হাতের বগলের নিচে একখানা ঢেউটিন, মাথায় একটি ঝাকায় কাসা পিতলের বাটি, জগ ও একটি কলস নিয়ে পাসতহবিলের দোকানের দিকে যাচ্ছে। আমি বাজারের উত্তর দিকে গিয়ে শফিজউদ্দিন মৌলভীর দোকানের সামনে যাবার পর উপস্থিত লোকদের কাছে জানতে পারি মদন সাহার দোকান লুট হয়েছে। কিছুক্ষন পর মদন সাহার দোকান ঘরটি ভেঙ্গে নৌকাযোগে তার (মাওলানা সাঈদী) শশুর ইউনুসল আলী মুুিন্স সাহেবের বাড়িতে নিয়ে তোলে।
লুটপাটের এ বর্ণনার পরে রুহুল আমীন নবীন ধর্ষনের বর্ননা দেন। তিনি বলেন, শান্তি কমিটি ও রাজাকার সদস্যরা পাক আর্মিদের নিয়ে পারের হাট বাজারের ছবি রায় ও ভানু সাহাকে ধর্ষণ করে। ভানু সাহাসহ আরো কয়েকটি মেয়েকে পাক আর্মিরা র্ধষন করে।
রুহুল আমিন নবীন সাক্ষ্য প্রদান শেষে আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, আমি একটি কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম। সেটি এখন বলতে চাই। আদালত অনুমতি দিলে তিনি বলেন, বিপদ সাহার মেয়ে ভানুসাহাকে কয়েক মাস আটকে রেখে উপর্যপুরী ধর্ষণ করা হয়। এসয় বিচারপতি এ.কে.এম জহির আহমেদ জানতে চান কারা ধর্ষণ করে। তখন রুহুল আমিন নবীন বলেন, পাক হানাদার বাহিনী।
রুহুল আমীন নবীন আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী শুধুমাত্র চারটি পরিচয় প্রকশ করে বলেন তার বয়স ৬১ বছর, ধর্ম ইসলাম এবং পেশা ব্যবসা।
সক্ষ্যে রুহুল আমিন নবীন বলেন, শান্তি কমিটির লোকেরা লুটপাট অগ্নিসংযোগ করে ই ক্ষান্ত হয়নি বরং ননীসাহা, মাখন সাহা, ডা. গণেশ চন্দ্র রায়, ডা. সতিশ চন্দ্র রায়, সুধীর চন্দ্র রায় গৌরাঙ্গসহ স্থানীয় অনেক হিন্দুকে জোর করে মুসলমান বানায়। জোর করে মুসলমান বানানো সবার নাম মনে না আসায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা তাকে স্মরণ করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা তার প্রতিবাদ জানান। তখন ট্রাইব্যুনাল অজিত নামে একজন হিন্দুর নাম সাক্ষ্যের তালিকা থেকে বাদ দেন।
একজন কম্পোজার সাক্ষীর বক্তব্য সাথে সাথে লিখে নেয়ার কাজ করেণ আদালতে। সাক্ষীর বক্তব্য লেখার সময় ভাষাগত বিষয় শুধরে লেখার জন্য মাঝে মাঝে কম্পোজারকে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। তখন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা বলেন, সাক্ষী যেভাবে বলছে ঠিক সেভাবেই হুবহু লিখতে দেয়া হোক। অন্যদিকে সাক্ষী বক্তব্য দেয়ার সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে লিড করার চেষ্টা করা হলে তারও প্রতিবাদ জানান মাওলানা সাঈদীর আইনজীরা। তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, সাক্ষীকে লিড করতে পারবেনা। তবে তাকে লিংক করিয়ে দিতে পারবে।
সাক্ষী প্রদানকালে রুহুল আমীন নবীন বলেন, মদন সাহার যে ঘরটি লুট করে নেয়া হয়েছিল স্বাধীনতার পর আমরা তা সাঈদীর শ্বশুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে মদন সাহাকে ফেরত দেই।
রহুল আমিন নবীন বলেন, স্বাধীনতাকমী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার লক্ষ্যে কতিপর স্বাধীনতা বিরোধী লোকদের নিয়ে সেকেন্দার আলী শিকদার, দানেশ মোল্লা, মাওলানা মোসলেহউদ্দিন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নেতৃত্বে পারের হাট এলাকায় রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়। অন্যান্য এলাকার ন্যায় পিরোজপুর এলাকার স্বাধীনতাকামীদের চিরতরে নিংশেষ করার জন্য ১৯৭১ সালের ৩ মে বর্বর পাক হানাদার বাহিনী আগমন করে। ৭ মে পারের হাটের শান্তি কমিটির সেকেন্দার আলী শিকদার, দানেস মোল্লা, মাওলানা মোসলেহউদ্দিন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেব সহ আরো কয়েকন পারের হাটে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য রিক্সা স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করতে থাকে। ২৬টি রিক্সাযোগে প্রায় ৫২ জন পাক হানাদার বাহিনী পারের হাটে প্রবশে করে। শান্তি কমিটির লোকজন পাক হানাদারদের নিয়ে পারেরহাট বাজারে প্রবেশ করে এবং আওয়ামী লীগ ও হিন্দুদের বাড়িঘর দোকানপাট দেখিয়ে দেয়। ক্যাপ্টেন এজাজ অন্যান্যদের সাথে পরামর্শ করে উর্দুতে বলেন ‘লে লও”। শান্তি কমিটি ও রাজাকারদের দেখিয়ে দেওয়া ঘরগুলোতে শুরু হয় লুটপাট। পারের হাট বাজারের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মাখন সাহার দোকানের মাটির নিচের লোহার সিন্দুক থেকে ২২ শের স্বর্ণ ও রূপা লুট করে। ৩০/৩৫টি দোকান ঘর লুটাপাট চালায়। পরের দিন ৮ মার্চ বাদুরা চিথলিয়া গ্রামে সাত আটটি ঘরে লুটাপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
আজ প্রথম সাক্ষী মাহবুবুল আলম হাওলাদারের জেরা শুরু হবার কথা ছিল। নিয়ম অনুযায়ী একজন সাক্ষীর জেরা না করে আরেক সাক্ষীর জবানবন্দী নেয়া যায়না। কিন্তু মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী সময় প্রার্থনা করায় প্রথম সাক্ষীর জেরা স্থগিত রেখে দ্বিতীয় সাক্ষীর জবানবন্দী নেয়া হয়। তবে নিয়ম রক্ষার খাতিরে মাহবুবুল আলমকে গতকাল দুয়েকটি প্রশ্ন করা হয়েছিল জেরার অংশ হিসেবে।
যাহোক আজ মাওলানা দেলাওয়ার সাঈদীর বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সাক্ষী রুহুল আমীন নবীন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্যে তিনি মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে পিরোজপুর পারের হাট বাজারে লুটপাট, জোর করে হিন্দুদের মুসলমান বানানো এবং পাক আর্মির বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনেন।
সাক্ষ্যের শুরুতে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর পেক্ষাপট বর্ণনা করে রুহুল আমিন নবীন বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রসদ কিনতে জুন মাসে বৃহষ্পতিবার হাটের দিন পারের হাট বাজারে যাই। এসময় লুঙ্গি ও পাঞ্জাবী পরিহিত তৎকালীন দেলাওয়ার হোসাইন শিকদার (বর্তমানে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী) বা হাতের বগলের নিচে একখানা ঢেউটিন, মাথায় একটি ঝাকায় কাসা পিতলের বাটি, জগ ও একটি কলস নিয়ে পাসতহবিলের দোকানের দিকে যাচ্ছে। আমি বাজারের উত্তর দিকে গিয়ে শফিজউদ্দিন মৌলভীর দোকানের সামনে যাবার পর উপস্থিত লোকদের কাছে জানতে পারি মদন সাহার দোকান লুট হয়েছে। কিছুক্ষন পর মদন সাহার দোকান ঘরটি ভেঙ্গে নৌকাযোগে তার (মাওলানা সাঈদী) শশুর ইউনুসল আলী মুুিন্স সাহেবের বাড়িতে নিয়ে তোলে।
লুটপাটের এ বর্ণনার পরে রুহুল আমীন নবীন ধর্ষনের বর্ননা দেন। তিনি বলেন, শান্তি কমিটি ও রাজাকার সদস্যরা পাক আর্মিদের নিয়ে পারের হাট বাজারের ছবি রায় ও ভানু সাহাকে ধর্ষণ করে। ভানু সাহাসহ আরো কয়েকটি মেয়েকে পাক আর্মিরা র্ধষন করে।
রুহুল আমিন নবীন সাক্ষ্য প্রদান শেষে আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, আমি একটি কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম। সেটি এখন বলতে চাই। আদালত অনুমতি দিলে তিনি বলেন, বিপদ সাহার মেয়ে ভানুসাহাকে কয়েক মাস আটকে রেখে উপর্যপুরী ধর্ষণ করা হয়। এসয় বিচারপতি এ.কে.এম জহির আহমেদ জানতে চান কারা ধর্ষণ করে। তখন রুহুল আমিন নবীন বলেন, পাক হানাদার বাহিনী।
রুহুল আমীন নবীন আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী শুধুমাত্র চারটি পরিচয় প্রকশ করে বলেন তার বয়স ৬১ বছর, ধর্ম ইসলাম এবং পেশা ব্যবসা।
সক্ষ্যে রুহুল আমিন নবীন বলেন, শান্তি কমিটির লোকেরা লুটপাট অগ্নিসংযোগ করে ই ক্ষান্ত হয়নি বরং ননীসাহা, মাখন সাহা, ডা. গণেশ চন্দ্র রায়, ডা. সতিশ চন্দ্র রায়, সুধীর চন্দ্র রায় গৌরাঙ্গসহ স্থানীয় অনেক হিন্দুকে জোর করে মুসলমান বানায়। জোর করে মুসলমান বানানো সবার নাম মনে না আসায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা তাকে স্মরণ করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা তার প্রতিবাদ জানান। তখন ট্রাইব্যুনাল অজিত নামে একজন হিন্দুর নাম সাক্ষ্যের তালিকা থেকে বাদ দেন।
একজন কম্পোজার সাক্ষীর বক্তব্য সাথে সাথে লিখে নেয়ার কাজ করেণ আদালতে। সাক্ষীর বক্তব্য লেখার সময় ভাষাগত বিষয় শুধরে লেখার জন্য মাঝে মাঝে কম্পোজারকে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। তখন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা বলেন, সাক্ষী যেভাবে বলছে ঠিক সেভাবেই হুবহু লিখতে দেয়া হোক। অন্যদিকে সাক্ষী বক্তব্য দেয়ার সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে লিড করার চেষ্টা করা হলে তারও প্রতিবাদ জানান মাওলানা সাঈদীর আইনজীরা। তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, সাক্ষীকে লিড করতে পারবেনা। তবে তাকে লিংক করিয়ে দিতে পারবে।
সাক্ষী প্রদানকালে রুহুল আমীন নবীন বলেন, মদন সাহার যে ঘরটি লুট করে নেয়া হয়েছিল স্বাধীনতার পর আমরা তা সাঈদীর শ্বশুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে মদন সাহাকে ফেরত দেই।
রহুল আমিন নবীন বলেন, স্বাধীনতাকমী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার লক্ষ্যে কতিপর স্বাধীনতা বিরোধী লোকদের নিয়ে সেকেন্দার আলী শিকদার, দানেশ মোল্লা, মাওলানা মোসলেহউদ্দিন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নেতৃত্বে পারের হাট এলাকায় রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়। অন্যান্য এলাকার ন্যায় পিরোজপুর এলাকার স্বাধীনতাকামীদের চিরতরে নিংশেষ করার জন্য ১৯৭১ সালের ৩ মে বর্বর পাক হানাদার বাহিনী আগমন করে। ৭ মে পারের হাটের শান্তি কমিটির সেকেন্দার আলী শিকদার, দানেস মোল্লা, মাওলানা মোসলেহউদ্দিন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেব সহ আরো কয়েকন পারের হাটে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য রিক্সা স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করতে থাকে। ২৬টি রিক্সাযোগে প্রায় ৫২ জন পাক হানাদার বাহিনী পারের হাটে প্রবশে করে। শান্তি কমিটির লোকজন পাক হানাদারদের নিয়ে পারেরহাট বাজারে প্রবেশ করে এবং আওয়ামী লীগ ও হিন্দুদের বাড়িঘর দোকানপাট দেখিয়ে দেয়। ক্যাপ্টেন এজাজ অন্যান্যদের সাথে পরামর্শ করে উর্দুতে বলেন ‘লে লও”। শান্তি কমিটি ও রাজাকারদের দেখিয়ে দেওয়া ঘরগুলোতে শুরু হয় লুটপাট। পারের হাট বাজারের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মাখন সাহার দোকানের মাটির নিচের লোহার সিন্দুক থেকে ২২ শের স্বর্ণ ও রূপা লুট করে। ৩০/৩৫টি দোকান ঘর লুটাপাট চালায়। পরের দিন ৮ মার্চ বাদুরা চিথলিয়া গ্রামে সাত আটটি ঘরে লুটাপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন