মেহেদী হাসান, ৯/৪/২০১৪
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতে বলেছেন, আসামি পক্ষ ইব্রাহিম কুট্টি হত্য বিষয়ে তার স্ত্রী মমতাজ বেগমের মামলার যে এফআইআর কপি জমা দিয়েছে তা জাল এবং মিথ্যা। বরিশাল সেশনজজ আদালত এবং পিরোজপুর থানায় এ মামলার মূল কপি পাওয়া যায়নি। আসামী পক্ষ মামলার প্রয়োজনে এ জাল কপি তৈরি করেছে। তাই মমতাজ বেগমের মামলার নথি হিসেবে আসামী পক্ষের দাখিল করা এ এভিডেন্স বিবেচনায় নেয় উচিত হবেনা।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আজ আদালতে বলেন, ইব্রাহীম কুট্টির হত্যা বিষয়ে মামলার নথির খেঁজে তিনি দুই দফা বরিশাল এবং একবার পিরোজপুর সফর করেছেন। কিন্তু সেখানে এ মামলার কাগজ খুজে পাওয়া যায়নি।
মমতাজ বেগমের দায়ের করা মামলার এফআইআর নথির সার্টিফাইড কপি আসামী পক্ষ ট্রাইব্যুনালে জমা দিয়েছে। সেটি প্রদর্শনী ‘এ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে । এফআইআর নথির সার্টিফাইড কপি বা প্রদর্শনী ‘এ’ আমলে না নেয়ার জন্য গতকাল অ্যাটর্নি জেনারেল লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন আপিল বিভাগে। গতকাল যুক্তি উপস্থাপনের সময় তিনি এ আবেদন পড়ে শোনান।
আসামী পক্ষের দায়ের করা ১৯৭২ সালের মামলার কপি রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জাল মিথ্যা এবং সৃজনকৃত হিসেবে আখ্যায়িত করার পর আদালত মামলার মূল সার্টিফাইড কপি দেখতে চেয়েছেন। আগামীকাল তা আপিল বিভাগের রেকর্ড রুম থেকে আদালতে হাজির করার জন্য বলেছেন আদালত।
মাওলানা সাঈদীর মামলার নথির খোঁজে অ্যাটর্নি জেনারেল বরিশাল এবং পিরোজপুর সফর করেছেন মর্মে সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রচারিহ হয়। তবে সাঈদীর মামলার নথির খোঁজে বরিশাল এবং পিরোজপর গেছেন একথা অস্বীকার করেন তিনি। কিন্তু আজ অ্যাটর্নি জেনারেল তার আবেদনে লিখিত আকারে জানান এ মামলার কাজে অর্থাৎ ইব্রাহীম কুট্টি হত্যা বিষয়ে মমতাজ বেগমের মামলার নথির খোঁজেই তিনি এ সফর করেছেন ।
ট্রাইব্যুনাল মাওলানা সাঈদীকে আটটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আজ এ আটটি অভিযোগ বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন শেষে দেলোয়ার শিকদার নাম প্রসঙ্গে যুক্তি পেশ করেন। এরপর তিনি আসামী পক্ষের দায়ের করা মমতাজ বেগমের মামলার ডকুমেন্ট বিষয়ে লিখিত আবেদন পেশ করেন এবং আদালতে তা পড়ে শোনান। প্রধান বিচারপতি মো : মোজাম্মেল হোসেন এর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ শুনানী গ্রহণ করেন।
মমতাজ বেগমের নথি বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এর আবেদন :
আসামী পক্ষের দায়ের করা মমতাজ বেগমের মামলার এফআইআর কপি বা প্রদর্শনী ‘এ’ আদালত কর্তৃক বিবেচনায় না নেয়ার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল লিখিত আবেদন ১০টি যুক্তি তুলে ধরেছেন।
লিখিত আবেদনে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আসামী পক্ষের দায়ের করা কথিত এফআইআর কপি বিষয়ে তদন্তের জন্য তিনি গত ২৯/৩/২০১৪ তারিখে পিরোজপুর সফর করেন। পিরোজপুর এসপির তত্ত্বাবধানে থানার ওসির মাধ্যমে এ মামলার রেকর্ড খোঁজ হয় কিন্তু কোন রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালে বিচারচলাকালে আসামী পক্ষ দাবি করেছে এ মামলার চার্জশিট হয়েছিল। সে মোতাবেক এ চার্জশিট বরিশাল স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল যা ১৯৭২ সালে গঠিত হয় সেখানে পাঠানোর কথা। সেখানে চার্জশিট পাওয়া যেতে পারে এ লক্ষ্যে আমি বরিশাল যাই এবং জেলাজজ আদালতের রেকর্ডরুমে খোঁজ করি। কিন্তু রেকর্ড কিপার আমাদের জানায় স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের কেস নম্বর ছাড়া এ রেকর্ড পাওয়া যাবেনা। তাই আমি আমার সহকর্মী নিয়ে আবার বরিশাল যাই এবং ১/৪/২০১৪ ও ২/৪/২০১৪ তারিখ ১৯৭২ সালে পিরোজপুরে দায়ের করা ৯ নং মামলার নথি খোঁজ করা হয়। কিন্তু নেজারাত আমাদের জানায় ওই তারিখের স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের কেস নাম্বার পাওয়া যাচ্ছেনা। স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ১৯৭২ এর রেজিস্ট্রার বইয়ে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত যেসব মামলার রেকর্ড রয়েছে তাতে পিরোজপুরে ১৯৭২ সালে দায়ের করা ৯ নং মামলার কোনকিছু নেই।
অ্যাটর্নি জেনারেল লিখিত আবেদনে বলেন, আসামী পক্ষ দাবি করেছে মমতাজ বেগমের মামলায় চার্জশিট হয়েছিল। সে হিসেবে স্বাভাবিকভাবে তাদের এ মামলার চার্জশিটও পাওয়ার কথা। কিন্তু এটা আশ্চর্য বিষয় যে, তারা এ মামলার চার্জশিটের কোন সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করতে পারেনি।
আাসামী পক্ষের দায়ের করা কপি থেকে দেখা যায় মমতাজ বেগম ২১/১০/১৯৭২ সালে মামলার সার্টিফাইড কপি লাভ করেন। মমতাজ বেগম কেন এ কপি সংগ্রহ করল এবং কেনই বা ২০১১ সাল পর্যন্ত এটা সংরক্ষন করল সে বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা নেই। আসামী পক্ষ তাদের সমস্ত কাগজপত্র অভিযুক্তর ছেলে ও ১৩ নং সাফাই সাক্ষীর মাধ্যমে দাখিল করেছে কিন্তু এই কাগজটি ১১ নং সাফাই সাক্ষীর মাধ্যমে দাখিল করিয়েছে এবং প্রদর্শনী ‘এ’ মার্ক করা হয়েছে। যেহেতু এটা জাল এবং বানানো তাই এটা ১৩ নং সাক্ষীর মাধ্যমে দাখিল করানো হয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম লিখিত আবেদনে আরো বলেন, এফআইআর এ কোন আসামীর নাম নাও থাকতে পারে বিভিন্ন কারনে। কিন্তু তদন্তের পর প্রকৃত আসামীদের নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। মমতাজ বেগমের মামলাটি সত্যি হলে এ মামলার একটি চার্জশিট আসামী পক্ষ অবশ্যই সংগ্রহ করতে পারত।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তাই নিম্নলিখিত কারনে প্রদর্শনী ‘এ’ বিবেচনায় নেয়া ঠিক হবেনা।
ক) মূল এফআইআর কপি পিরোজপুর পুলিশ স্টেশন বা বরিশাল সেশন জজ আদালত কোথাও পাওয়া যাচ্ছেনা। কাজেই আসামী পক্ষের জমা দেয়া ডকুমেন্ট এর সত্যতা যাচাই করা যাচ্ছেনা।
খ) আসামী পক্ষের দাবি এ মামলার চার্জশিট হয়েছিল। যেহেতু তারা এ মামলার চার্জশিট জমা দিতে পারেনি কাজেই মাওলানা সাঈদী ইব্রাহীম কুট্টি হত্যার সাথে জড়িত ছিলনা মর্মে আসামী পক্ষের দাবি সঠিক নয়।
গ) কথিত এফআইআর এ ইব্রাহীম কুট্টি হত্যার বিবরনের সাথে তারই তিনজন ঘণিষ্ঠ আত্মীয়ের বক্তব্যের সাথে মিল নেই।
ঘ) ডকুমেন্টটি আইন অনুযায়ী দাখিল করা হয়নি।
ঙ) একজন গ্রাম্য দরিদ্র মহিলা ১৯৭২ সালে সার্টিফাইড কপিটি তোলেন বলে বলা হচ্ছে। গ্রামের একজন দরিদ্র মহিলার কাছে ৪০ বছর ধরে সংরক্ষিত কপিটি দেখতে এত নতুন হতে পারেনা।
চ) কপিটিতে সেসময়কার ট্রাইব্যুনালের কোন সিল নেই এবং সার্টিফাইড কপির একটি ফটোকপিতে প্রদর্শনী ‘এ’ মার্ক করা হয়েছে ট্রাইব্যুনালে।
ছ) অভিযোগের প্রতি পাতায় উপরে ডানদিকে বাদীর স্বাক্ষর থাকার কথা কিন্তু তা নেই।
জ) অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত এবং বাদীর পূর্ণ ঠিকানা থাকতে হয়। কিন্তু তা নেই।
ঝ) ১৩ তম সাফাই স্বাক্ষীর বক্তব্য অনুযায়ী প্রদর্শনী ‘এ’ সিতারা বেগমের কাছে ছিল। ইব্রাহীমরে স্ত্রী মমতাজ বেগম তার মা সিতারা বেগমের কাছ থেকে নিয়ে ১৩ তম সাক্ষীর বড়ভাই রাফিক সাঈদীকে প্রদান করে। এরপর সে তা ১৩ তম সাফাই স্বাক্ষীকে দেয় ১৩ তম সাক্ষী আবার তা ১১ তম সাক্ষীকে দেয় যে কিনা জামায়াতের একজন নেতা। এ ডকুমেন্ট দাখিলের সময় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আপত্তি তোলা হয়েছে।
ঞ) এসব কারনে আসামী পক্ষের দায়ের করা কপি প্রদর্শনী ‘এ’ মিথ্যা, জাল এবং মামলার প্রয়োজনে সৃজন করা হয়েছে। সে কারনে এটা বিবেচনায় নেয়া সটিক নয়।
অভিযোগ বিষয়ে যুক্তি পেশ শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল শিকদার নাম প্রসঙ্গ এবং মমতাজ বেগমের মামলার নথি বিষয়ে যুক্তি পেশ করছিলেন। এ সময় একজন বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আসামী পক্ষের দায়ের করা মমতাজ বেগমের মামলার নর্থির বিরুদ্ধে আপনি কি নিয়ে এসেছেন বলেন। অ্যাটর্নি জেনারেল এরপর তার আবেদন থেকে পড়ে শোনান। এসময় আদালত বলেন, আপনি আমাদের কাছ থেকে সময় নিয়ে পটুয়াখালি বেড়াতে গিয়েছিলেন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি এ মামলার কাজেই বরিশাল গিয়েছি। মমতাজ বেগমের মামলার নথিকে জাল আখ্যায়িত করে যুক্তি পেশের সময় একজন বিচারপতি বলেন, আপনি বলতে চাচ্ছেন মমতাজ বেগমের মামল ফেক?
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, হ্যা ফেক। কারণ ইব্রাহীম কুট্টির তিনজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয় যথা তার শাশুড়ী সিতারা বেগম, শ্যালিকা রানী বেগম এবং শ্যালক মোস্তফা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দী দিয়েছে তার সাথে মমতাজ বেগমের মামলার কথিত এফআইআর এ বর্নিত ঘটনার মিল নেই।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এ তিন সাক্ষীর জবানবন্দী তাদের অনুপস্থিতিতে ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে।
আদালত এসময় বলেন, আসামী পক্ষ ৪০ বছর আগে তোলা মামলার যে সার্টিফাইড কপি জমা দিয়েছে তা কোথায়? আসামী পক্ষ এবং রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জানানো হয় সেটা আপিল বিভাগের রেকর্ডরুমে জমা আছে। প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন এসময় অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, সেটা নিয়ে আসলেননা কেন? আপনাদের না সেটা দেখার অনুমতি দিলাম?
এ পর্যায়ে আদালত বলেন, ৪০ বছর আগের কপিটি কেমন তা দেখা দরকার। আদালত কপিটি রেকর্ডরুম থেকে আগামীকাল আদালতে হাজির করার আদেশ দেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, তারা যে মূল সার্টিফাইড কপিটি জমা দিয়েছে তাতে প্রদর্শনী মার্ক করা হয়নি। প্রদর্শনী মার্ক করা হয়েছে ফটোকপির ওপর। আদালত বলেন, বলেন কি? এ পর্যায়ে একটা বেজে যাওয়ায় বিচার কার্যক্রম আগামীকাল বৃহষ্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
ট্রাইব্যুনালে মাওলানা সাঈদীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মিজানুল ইসলাম। মমতাজ বেগমের মামলার ডকুমেন্ট বিষয়ে আজ অ্যাটর্নি জেনারেল এর দাবি বিষয়ে তিনি দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল এর দাবি বিষয়ে আমরা লিখিত জবাব দেব। অ্যাটর্নি জেনালে বলেছেন, আমাদের জমা দেয়া কপিতে সেসময়কার ট্রাইব্যুনালের সিল নেই। কপিটি পিরোজপুর থেকে ইস্যু হয় ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আগেই। কাজেই ট্রাইব্যুনালের সিল থাকবে কেমন করে। অ্যাটর্নি জেনারেল এর প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমি বলছি তিনি কি করে এসব অযৌক্তিক প্রশ্ন উত্থাপন করলেন তা আমাদের বুঝে আসেনা। মমতাজ বেগমের মামলার জিআর কপি বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এর আবেদনে একটি কথাও নেই। আমাদের কাছে আছে জিআর কপি আছে এবং ট্রাইব্যুনালে তা আমরা জমা দিতে চেয়েছি কিন্তু ট্রাইব্যুনাল সে আবেদন খারিজ করেছে। আমরা আরো আবেদন করেছিলাম পিরোজপুর থেকে মামলার জিআর কপি তলব করা হোক। তাও খারিজ হয়। আমরা চার্জশিট জমা দেইনি বলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। জিআর কপিতে মামলার চার্জশিট হয়েছিল মর্মে উল্লেখ আছে।
মিজানুল ইসলাম বরেন, একজন গ্রাম্য মহিলা কেন সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করল এবং তা কেন এতদিন সংরক্ষন করল বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সে মামলার বাদী। মমতাজ বেগমের স্বামী, ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতরা সিতারা বেগমের সন্তান এবং জামাই। তারা এ কপি সংগ্রহ করে রাখবেনা তো কে রাখবে? তাদের কেন কোর্টে আনা হলনা? মমতাজ বেগম জীবিত থাকা সত্ত্বেও তদন্ত কর্মকর্তা কেন তার কাছে গেলনা এবং তাকে স্বাক্ষী করলনা?
কাজেই আমাদের ডকুমেন্ট জাল এ পর্যায়ে আর এ প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।
শুনানীর সময় রাষ্ট্রপক্ষে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এমকে আনোয়ার।
আসামী পক্ষে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশন এর সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, এসএম শাহজাহান, তাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন, মহিনুর ইসলাম, মতিয়ার রহমান, মোসাদ্দেক বিল্লাহ।
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ইব্রাহিম কুট্টি হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদন্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। ইব্রাহিম কুট্টি হত্যা বিষয়ে তার স্ত্রী মমতাজ বেগম ১৯৭২ সালে একটি মামলা করেন পিরোজপুর আদালতে। সে মামলায় মমতাজ বেগম ১৩ জনকে আসামী করেন। আসামীর তালিকায় মাওলানা সাঈদীর নাম নেই। সে মামলার কপি ট্রাইব্যুনালে জমা দেয় আসামী পক্ষ।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতে বলেছেন, আসামি পক্ষ ইব্রাহিম কুট্টি হত্য বিষয়ে তার স্ত্রী মমতাজ বেগমের মামলার যে এফআইআর কপি জমা দিয়েছে তা জাল এবং মিথ্যা। বরিশাল সেশনজজ আদালত এবং পিরোজপুর থানায় এ মামলার মূল কপি পাওয়া যায়নি। আসামী পক্ষ মামলার প্রয়োজনে এ জাল কপি তৈরি করেছে। তাই মমতাজ বেগমের মামলার নথি হিসেবে আসামী পক্ষের দাখিল করা এ এভিডেন্স বিবেচনায় নেয় উচিত হবেনা।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আজ আদালতে বলেন, ইব্রাহীম কুট্টির হত্যা বিষয়ে মামলার নথির খেঁজে তিনি দুই দফা বরিশাল এবং একবার পিরোজপুর সফর করেছেন। কিন্তু সেখানে এ মামলার কাগজ খুজে পাওয়া যায়নি।
মমতাজ বেগমের দায়ের করা মামলার এফআইআর নথির সার্টিফাইড কপি আসামী পক্ষ ট্রাইব্যুনালে জমা দিয়েছে। সেটি প্রদর্শনী ‘এ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে । এফআইআর নথির সার্টিফাইড কপি বা প্রদর্শনী ‘এ’ আমলে না নেয়ার জন্য গতকাল অ্যাটর্নি জেনারেল লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন আপিল বিভাগে। গতকাল যুক্তি উপস্থাপনের সময় তিনি এ আবেদন পড়ে শোনান।
আসামী পক্ষের দায়ের করা ১৯৭২ সালের মামলার কপি রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জাল মিথ্যা এবং সৃজনকৃত হিসেবে আখ্যায়িত করার পর আদালত মামলার মূল সার্টিফাইড কপি দেখতে চেয়েছেন। আগামীকাল তা আপিল বিভাগের রেকর্ড রুম থেকে আদালতে হাজির করার জন্য বলেছেন আদালত।
মাওলানা সাঈদীর মামলার নথির খোঁজে অ্যাটর্নি জেনারেল বরিশাল এবং পিরোজপুর সফর করেছেন মর্মে সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রচারিহ হয়। তবে সাঈদীর মামলার নথির খোঁজে বরিশাল এবং পিরোজপর গেছেন একথা অস্বীকার করেন তিনি। কিন্তু আজ অ্যাটর্নি জেনারেল তার আবেদনে লিখিত আকারে জানান এ মামলার কাজে অর্থাৎ ইব্রাহীম কুট্টি হত্যা বিষয়ে মমতাজ বেগমের মামলার নথির খোঁজেই তিনি এ সফর করেছেন ।
ট্রাইব্যুনাল মাওলানা সাঈদীকে আটটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আজ এ আটটি অভিযোগ বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন শেষে দেলোয়ার শিকদার নাম প্রসঙ্গে যুক্তি পেশ করেন। এরপর তিনি আসামী পক্ষের দায়ের করা মমতাজ বেগমের মামলার ডকুমেন্ট বিষয়ে লিখিত আবেদন পেশ করেন এবং আদালতে তা পড়ে শোনান। প্রধান বিচারপতি মো : মোজাম্মেল হোসেন এর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ শুনানী গ্রহণ করেন।
মমতাজ বেগমের নথি বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এর আবেদন :
আসামী পক্ষের দায়ের করা মমতাজ বেগমের মামলার এফআইআর কপি বা প্রদর্শনী ‘এ’ আদালত কর্তৃক বিবেচনায় না নেয়ার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল লিখিত আবেদন ১০টি যুক্তি তুলে ধরেছেন।
লিখিত আবেদনে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আসামী পক্ষের দায়ের করা কথিত এফআইআর কপি বিষয়ে তদন্তের জন্য তিনি গত ২৯/৩/২০১৪ তারিখে পিরোজপুর সফর করেন। পিরোজপুর এসপির তত্ত্বাবধানে থানার ওসির মাধ্যমে এ মামলার রেকর্ড খোঁজ হয় কিন্তু কোন রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালে বিচারচলাকালে আসামী পক্ষ দাবি করেছে এ মামলার চার্জশিট হয়েছিল। সে মোতাবেক এ চার্জশিট বরিশাল স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল যা ১৯৭২ সালে গঠিত হয় সেখানে পাঠানোর কথা। সেখানে চার্জশিট পাওয়া যেতে পারে এ লক্ষ্যে আমি বরিশাল যাই এবং জেলাজজ আদালতের রেকর্ডরুমে খোঁজ করি। কিন্তু রেকর্ড কিপার আমাদের জানায় স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের কেস নম্বর ছাড়া এ রেকর্ড পাওয়া যাবেনা। তাই আমি আমার সহকর্মী নিয়ে আবার বরিশাল যাই এবং ১/৪/২০১৪ ও ২/৪/২০১৪ তারিখ ১৯৭২ সালে পিরোজপুরে দায়ের করা ৯ নং মামলার নথি খোঁজ করা হয়। কিন্তু নেজারাত আমাদের জানায় ওই তারিখের স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের কেস নাম্বার পাওয়া যাচ্ছেনা। স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ১৯৭২ এর রেজিস্ট্রার বইয়ে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত যেসব মামলার রেকর্ড রয়েছে তাতে পিরোজপুরে ১৯৭২ সালে দায়ের করা ৯ নং মামলার কোনকিছু নেই।
অ্যাটর্নি জেনারেল লিখিত আবেদনে বলেন, আসামী পক্ষ দাবি করেছে মমতাজ বেগমের মামলায় চার্জশিট হয়েছিল। সে হিসেবে স্বাভাবিকভাবে তাদের এ মামলার চার্জশিটও পাওয়ার কথা। কিন্তু এটা আশ্চর্য বিষয় যে, তারা এ মামলার চার্জশিটের কোন সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করতে পারেনি।
আাসামী পক্ষের দায়ের করা কপি থেকে দেখা যায় মমতাজ বেগম ২১/১০/১৯৭২ সালে মামলার সার্টিফাইড কপি লাভ করেন। মমতাজ বেগম কেন এ কপি সংগ্রহ করল এবং কেনই বা ২০১১ সাল পর্যন্ত এটা সংরক্ষন করল সে বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা নেই। আসামী পক্ষ তাদের সমস্ত কাগজপত্র অভিযুক্তর ছেলে ও ১৩ নং সাফাই সাক্ষীর মাধ্যমে দাখিল করেছে কিন্তু এই কাগজটি ১১ নং সাফাই সাক্ষীর মাধ্যমে দাখিল করিয়েছে এবং প্রদর্শনী ‘এ’ মার্ক করা হয়েছে। যেহেতু এটা জাল এবং বানানো তাই এটা ১৩ নং সাক্ষীর মাধ্যমে দাখিল করানো হয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম লিখিত আবেদনে আরো বলেন, এফআইআর এ কোন আসামীর নাম নাও থাকতে পারে বিভিন্ন কারনে। কিন্তু তদন্তের পর প্রকৃত আসামীদের নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। মমতাজ বেগমের মামলাটি সত্যি হলে এ মামলার একটি চার্জশিট আসামী পক্ষ অবশ্যই সংগ্রহ করতে পারত।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তাই নিম্নলিখিত কারনে প্রদর্শনী ‘এ’ বিবেচনায় নেয়া ঠিক হবেনা।
ক) মূল এফআইআর কপি পিরোজপুর পুলিশ স্টেশন বা বরিশাল সেশন জজ আদালত কোথাও পাওয়া যাচ্ছেনা। কাজেই আসামী পক্ষের জমা দেয়া ডকুমেন্ট এর সত্যতা যাচাই করা যাচ্ছেনা।
খ) আসামী পক্ষের দাবি এ মামলার চার্জশিট হয়েছিল। যেহেতু তারা এ মামলার চার্জশিট জমা দিতে পারেনি কাজেই মাওলানা সাঈদী ইব্রাহীম কুট্টি হত্যার সাথে জড়িত ছিলনা মর্মে আসামী পক্ষের দাবি সঠিক নয়।
গ) কথিত এফআইআর এ ইব্রাহীম কুট্টি হত্যার বিবরনের সাথে তারই তিনজন ঘণিষ্ঠ আত্মীয়ের বক্তব্যের সাথে মিল নেই।
ঘ) ডকুমেন্টটি আইন অনুযায়ী দাখিল করা হয়নি।
ঙ) একজন গ্রাম্য দরিদ্র মহিলা ১৯৭২ সালে সার্টিফাইড কপিটি তোলেন বলে বলা হচ্ছে। গ্রামের একজন দরিদ্র মহিলার কাছে ৪০ বছর ধরে সংরক্ষিত কপিটি দেখতে এত নতুন হতে পারেনা।
চ) কপিটিতে সেসময়কার ট্রাইব্যুনালের কোন সিল নেই এবং সার্টিফাইড কপির একটি ফটোকপিতে প্রদর্শনী ‘এ’ মার্ক করা হয়েছে ট্রাইব্যুনালে।
ছ) অভিযোগের প্রতি পাতায় উপরে ডানদিকে বাদীর স্বাক্ষর থাকার কথা কিন্তু তা নেই।
জ) অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত এবং বাদীর পূর্ণ ঠিকানা থাকতে হয়। কিন্তু তা নেই।
ঝ) ১৩ তম সাফাই স্বাক্ষীর বক্তব্য অনুযায়ী প্রদর্শনী ‘এ’ সিতারা বেগমের কাছে ছিল। ইব্রাহীমরে স্ত্রী মমতাজ বেগম তার মা সিতারা বেগমের কাছ থেকে নিয়ে ১৩ তম সাক্ষীর বড়ভাই রাফিক সাঈদীকে প্রদান করে। এরপর সে তা ১৩ তম সাফাই স্বাক্ষীকে দেয় ১৩ তম সাক্ষী আবার তা ১১ তম সাক্ষীকে দেয় যে কিনা জামায়াতের একজন নেতা। এ ডকুমেন্ট দাখিলের সময় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আপত্তি তোলা হয়েছে।
ঞ) এসব কারনে আসামী পক্ষের দায়ের করা কপি প্রদর্শনী ‘এ’ মিথ্যা, জাল এবং মামলার প্রয়োজনে সৃজন করা হয়েছে। সে কারনে এটা বিবেচনায় নেয়া সটিক নয়।
অভিযোগ বিষয়ে যুক্তি পেশ শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল শিকদার নাম প্রসঙ্গ এবং মমতাজ বেগমের মামলার নথি বিষয়ে যুক্তি পেশ করছিলেন। এ সময় একজন বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আসামী পক্ষের দায়ের করা মমতাজ বেগমের মামলার নর্থির বিরুদ্ধে আপনি কি নিয়ে এসেছেন বলেন। অ্যাটর্নি জেনারেল এরপর তার আবেদন থেকে পড়ে শোনান। এসময় আদালত বলেন, আপনি আমাদের কাছ থেকে সময় নিয়ে পটুয়াখালি বেড়াতে গিয়েছিলেন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি এ মামলার কাজেই বরিশাল গিয়েছি। মমতাজ বেগমের মামলার নথিকে জাল আখ্যায়িত করে যুক্তি পেশের সময় একজন বিচারপতি বলেন, আপনি বলতে চাচ্ছেন মমতাজ বেগমের মামল ফেক?
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, হ্যা ফেক। কারণ ইব্রাহীম কুট্টির তিনজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয় যথা তার শাশুড়ী সিতারা বেগম, শ্যালিকা রানী বেগম এবং শ্যালক মোস্তফা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দী দিয়েছে তার সাথে মমতাজ বেগমের মামলার কথিত এফআইআর এ বর্নিত ঘটনার মিল নেই।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এ তিন সাক্ষীর জবানবন্দী তাদের অনুপস্থিতিতে ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে।
আদালত এসময় বলেন, আসামী পক্ষ ৪০ বছর আগে তোলা মামলার যে সার্টিফাইড কপি জমা দিয়েছে তা কোথায়? আসামী পক্ষ এবং রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জানানো হয় সেটা আপিল বিভাগের রেকর্ডরুমে জমা আছে। প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন এসময় অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, সেটা নিয়ে আসলেননা কেন? আপনাদের না সেটা দেখার অনুমতি দিলাম?
এ পর্যায়ে আদালত বলেন, ৪০ বছর আগের কপিটি কেমন তা দেখা দরকার। আদালত কপিটি রেকর্ডরুম থেকে আগামীকাল আদালতে হাজির করার আদেশ দেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, তারা যে মূল সার্টিফাইড কপিটি জমা দিয়েছে তাতে প্রদর্শনী মার্ক করা হয়নি। প্রদর্শনী মার্ক করা হয়েছে ফটোকপির ওপর। আদালত বলেন, বলেন কি? এ পর্যায়ে একটা বেজে যাওয়ায় বিচার কার্যক্রম আগামীকাল বৃহষ্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
ট্রাইব্যুনালে মাওলানা সাঈদীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মিজানুল ইসলাম। মমতাজ বেগমের মামলার ডকুমেন্ট বিষয়ে আজ অ্যাটর্নি জেনারেল এর দাবি বিষয়ে তিনি দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল এর দাবি বিষয়ে আমরা লিখিত জবাব দেব। অ্যাটর্নি জেনালে বলেছেন, আমাদের জমা দেয়া কপিতে সেসময়কার ট্রাইব্যুনালের সিল নেই। কপিটি পিরোজপুর থেকে ইস্যু হয় ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আগেই। কাজেই ট্রাইব্যুনালের সিল থাকবে কেমন করে। অ্যাটর্নি জেনারেল এর প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমি বলছি তিনি কি করে এসব অযৌক্তিক প্রশ্ন উত্থাপন করলেন তা আমাদের বুঝে আসেনা। মমতাজ বেগমের মামলার জিআর কপি বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এর আবেদনে একটি কথাও নেই। আমাদের কাছে আছে জিআর কপি আছে এবং ট্রাইব্যুনালে তা আমরা জমা দিতে চেয়েছি কিন্তু ট্রাইব্যুনাল সে আবেদন খারিজ করেছে। আমরা আরো আবেদন করেছিলাম পিরোজপুর থেকে মামলার জিআর কপি তলব করা হোক। তাও খারিজ হয়। আমরা চার্জশিট জমা দেইনি বলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। জিআর কপিতে মামলার চার্জশিট হয়েছিল মর্মে উল্লেখ আছে।
মিজানুল ইসলাম বরেন, একজন গ্রাম্য মহিলা কেন সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করল এবং তা কেন এতদিন সংরক্ষন করল বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সে মামলার বাদী। মমতাজ বেগমের স্বামী, ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতরা সিতারা বেগমের সন্তান এবং জামাই। তারা এ কপি সংগ্রহ করে রাখবেনা তো কে রাখবে? তাদের কেন কোর্টে আনা হলনা? মমতাজ বেগম জীবিত থাকা সত্ত্বেও তদন্ত কর্মকর্তা কেন তার কাছে গেলনা এবং তাকে স্বাক্ষী করলনা?
কাজেই আমাদের ডকুমেন্ট জাল এ পর্যায়ে আর এ প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।
শুনানীর সময় রাষ্ট্রপক্ষে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এমকে আনোয়ার।
আসামী পক্ষে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশন এর সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, এসএম শাহজাহান, তাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন, মহিনুর ইসলাম, মতিয়ার রহমান, মোসাদ্দেক বিল্লাহ।
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ইব্রাহিম কুট্টি হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদন্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। ইব্রাহিম কুট্টি হত্যা বিষয়ে তার স্ত্রী মমতাজ বেগম ১৯৭২ সালে একটি মামলা করেন পিরোজপুর আদালতে। সে মামলায় মমতাজ বেগম ১৩ জনকে আসামী করেন। আসামীর তালিকায় মাওলানা সাঈদীর নাম নেই। সে মামলার কপি ট্রাইব্যুনালে জমা দেয় আসামী পক্ষ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন