মেহেদী হাসান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা মামলায় আসামী পক্ষের আপিল শুনানী আজ শেষ হয়েছে। আসামী পক্ষের শুনানী শেষে রাষ্ট্রপক্ষে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার জবাব প্রদান শুরু করেছেন।
প্রধান বিচারপতি মো : মোজাম্মেল হোসেন এর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ শুনানী গ্রহণ করেন।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আজ শুনানীর শেষ পর্যায়ে তিনটি দফা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন আব্দুল কাদের মোল্লা হাক্কা গুন্ডা, আক্তার গুন্ডাসহ বিহারী গুন্ডাদের কালপাবল এসোসিয়েশন ছিল বলে ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়টি তারা জুড়িশিয়াল নোটিশের মাধ্যমে আমলে নিয়ে আব্দুল কাদের মোল্লাকে বিহারী গুন্ডাদের দোসর হিসেবে বর্নিত করা হয়েছে। ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ইতিহাসের প্রতিষ্ঠিত কোন ঘটনাকে আদালত জুড়িশিয়াল নোটিশে নিতে পারে। তা প্রমানের দরকার হয়না। যেমন ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইটের ঘটনা আদালত জুড়িশিয়াল নোটিশে নিতে পারে। এটা নতুন করে প্রমানের দরকার হয়না। কিন্তু আব্দুল কাদের মোল্লা বিহারী গুন্ডাদের দোসর ছিল এবং তাদের সাথে অপকর্মে অংশ নিয়েছে এটা প্রমান করা ব্যাতিরেকে কি করে আদালত জুড়িশিয়াল নোটিশে নিতে পারে? আব্দুল কাদের মোল্লা বিহারী গুন্ডাদের দোসর হিসেবে বিভিন্ন অপকর্ম করেছে তা তো কোন প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক ঘটনা নয়। কিন্তু জুড়িশিয়াল নোটিশের সুযোগ নিয়ে ট্রাইব্যুনাল এটি করেছে। ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন এটা অবৈধ।
এরপর তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনাল আব্দুল কাদের মোল্লাকে আলুবদী হত্যাকান্ড এবং হযরত আলী পরিবারকে হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ এ অভিযোগে ফাঁসির দাবি করেছে। রাষ্ট্রপক্ষের এখন প্রমান করতে হবে ট্রাইব্যুনাল যে যাবজ্জীবন রায় দিয়েছে তা একটি পারভারস বা ন্যায়ভ্রষ্ট রায়। এটি প্রমান না করে তারা এ দাবি করতে পারেনা। একই ভাবে ঘাটার চর হত্যাকান্ড অভিযোগ থেকে আব্দুল কাদের মোল্লাকে খালাস দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। রাষ্ট্রপক্ষ এ অভিযোগে শাস্তি দাবি করে আপিল করেছে। এ ক্ষেত্রেও তাদের প্রমান করতে হবে যে, ট্রাইবু্যুনাল এ ক্ষেত্রেও ন্যায়ভ্রষ্ট রায় দিয়েছে।
তিনি বলেন, হযরত আলী হত্যাকান্ডে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মোমেনা বেগমকে পুনরায় পাঁচটি প্রশ্নের জেরা করার জন্য রিকলের আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল সে আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মোমেনা বেগম তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দী দিয়েছেন সেখানে তিনি তার পিতা এবং পরিবারের লোকজনের হত্যাকান্ড বিষয়ে আব্দুল কাদের মোল্লার নাম বলেননি। তিনি বলেছেন- বিহারীরা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে এবং তাদের তিনি চিনতেন। ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার কাছে মোমেনা বেগমের এ জবানবন্দী আমলে নেয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
ঘাটার চর ঘটনা এবং আদালতের প্রশ্ন এটর্নি জেনারেলের কাছে : চার নং অভিযোগ কেরানীগঞ্জের ঘাটার চর হত্যাকান্ড থেকে আব্দুল কাদের মোল্লাকে খালাস দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে শুনানী পেশের সময় এটর্নি জেনারেলকে আদালত কয়েকটি প্রশ্ন করেন। সে প্রশ্নে যাবার আগে ঘাটার চর ঘটনা এবং সংশ্লিষ্ট সাক্ষীর জবানবন্দী বিষয়ে জেনে নেয়া দরকার।
ঘাটার চর ঘটনার অভিযোগ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বিবরন : ১৯৭১ সালের ২৫ নভেম্বর আব্দুল কাদের মোল্লা ৬০-৭০ জন রাজাকার আল বদর বাহিনী নিয়ে ঘাটার চরে হামলা চালায়। এসময় তারা ওসমান গনি এবং গোলাম মোস্তফা নামে দুজন মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। এছাড়া দুটি গ্রামে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অসংখ্য মানুষ হত্যা করে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষে তিন জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাদের একজন হলেন আব্দুল মজিদ পালোয়ান। তিনি বলেছেন ২৫ নভেম্বর সকালে তাদের গ্রামের উত্তর দিক থেকে গুলি আসতে লাগল। তিনি ঘটনা জানার জন্য যেদিক থেকে গুলি আসতে লাগল সেদিকেই অগ্রসর হন।
বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিয়া এটর্নি জেনারেলকে প্রশ্ন করেন আর্মি আসা এবং গুলির আসার শব্দে সবাই যাচ্ছে একদিকে আর সাক্ষী যাচ্ছে যেদিক থেকে গুলি আসচে সেদিকে। এটা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব কি-না। সেসময় সাক্ষীর বয়স কত ছিল?
এটর্নি জেনারেল বলেন ১৬। বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিয়া বলেন, ১৫/১৬ বছরের একটি ছেলের পক্ষে আর্মি আসার খবর পেয়ে সেখানে দাড়িয়ে থাকা এবং গুলি যেদিক থেকে আসছে সেদিকে এগিয়ে যাওয়া কি সম্ভব?
এটর্নি জেনারেল বলেন, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা । তাছাড়া যুদ্ধ তখন শেষ পর্যায়ে। তাই এটা সম্ভব ছিল।
বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিয়া বলেন, আসামী পক্ষের আইনজীবী দাবি করেছেন আপনারা যে মৃত্যুদণ্ড এবং খালাস দেয়া অভিযোগে শাস্তি দাবি করেছেন তার পক্ষে প্রমান করতে হবে যে, ওই বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের রায় পারভারস ছিল। সাধারনত রায় পারভারস না হলে আমরা হস্তক্ষেপ করিনা।
এ পর্যায়ে আজকের মত শুনানীর শেষ হয়।
আসামী পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাককে যুক্তি উপস্থাপনে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান, অ্যাডভোকেট শিশির মো : মনির, অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ আলী চৌধুরী প্রমুখ ।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা মামলায় আসামী পক্ষের আপিল শুনানী আজ শেষ হয়েছে। আসামী পক্ষের শুনানী শেষে রাষ্ট্রপক্ষে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার জবাব প্রদান শুরু করেছেন।
প্রধান বিচারপতি মো : মোজাম্মেল হোসেন এর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ শুনানী গ্রহণ করেন।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আজ শুনানীর শেষ পর্যায়ে তিনটি দফা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন আব্দুল কাদের মোল্লা হাক্কা গুন্ডা, আক্তার গুন্ডাসহ বিহারী গুন্ডাদের কালপাবল এসোসিয়েশন ছিল বলে ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়টি তারা জুড়িশিয়াল নোটিশের মাধ্যমে আমলে নিয়ে আব্দুল কাদের মোল্লাকে বিহারী গুন্ডাদের দোসর হিসেবে বর্নিত করা হয়েছে। ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ইতিহাসের প্রতিষ্ঠিত কোন ঘটনাকে আদালত জুড়িশিয়াল নোটিশে নিতে পারে। তা প্রমানের দরকার হয়না। যেমন ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইটের ঘটনা আদালত জুড়িশিয়াল নোটিশে নিতে পারে। এটা নতুন করে প্রমানের দরকার হয়না। কিন্তু আব্দুল কাদের মোল্লা বিহারী গুন্ডাদের দোসর ছিল এবং তাদের সাথে অপকর্মে অংশ নিয়েছে এটা প্রমান করা ব্যাতিরেকে কি করে আদালত জুড়িশিয়াল নোটিশে নিতে পারে? আব্দুল কাদের মোল্লা বিহারী গুন্ডাদের দোসর হিসেবে বিভিন্ন অপকর্ম করেছে তা তো কোন প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক ঘটনা নয়। কিন্তু জুড়িশিয়াল নোটিশের সুযোগ নিয়ে ট্রাইব্যুনাল এটি করেছে। ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন এটা অবৈধ।
এরপর তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনাল আব্দুল কাদের মোল্লাকে আলুবদী হত্যাকান্ড এবং হযরত আলী পরিবারকে হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ এ অভিযোগে ফাঁসির দাবি করেছে। রাষ্ট্রপক্ষের এখন প্রমান করতে হবে ট্রাইব্যুনাল যে যাবজ্জীবন রায় দিয়েছে তা একটি পারভারস বা ন্যায়ভ্রষ্ট রায়। এটি প্রমান না করে তারা এ দাবি করতে পারেনা। একই ভাবে ঘাটার চর হত্যাকান্ড অভিযোগ থেকে আব্দুল কাদের মোল্লাকে খালাস দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। রাষ্ট্রপক্ষ এ অভিযোগে শাস্তি দাবি করে আপিল করেছে। এ ক্ষেত্রেও তাদের প্রমান করতে হবে যে, ট্রাইবু্যুনাল এ ক্ষেত্রেও ন্যায়ভ্রষ্ট রায় দিয়েছে।
তিনি বলেন, হযরত আলী হত্যাকান্ডে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মোমেনা বেগমকে পুনরায় পাঁচটি প্রশ্নের জেরা করার জন্য রিকলের আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল সে আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মোমেনা বেগম তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দী দিয়েছেন সেখানে তিনি তার পিতা এবং পরিবারের লোকজনের হত্যাকান্ড বিষয়ে আব্দুল কাদের মোল্লার নাম বলেননি। তিনি বলেছেন- বিহারীরা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে এবং তাদের তিনি চিনতেন। ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার কাছে মোমেনা বেগমের এ জবানবন্দী আমলে নেয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
ঘাটার চর ঘটনা এবং আদালতের প্রশ্ন এটর্নি জেনারেলের কাছে : চার নং অভিযোগ কেরানীগঞ্জের ঘাটার চর হত্যাকান্ড থেকে আব্দুল কাদের মোল্লাকে খালাস দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে শুনানী পেশের সময় এটর্নি জেনারেলকে আদালত কয়েকটি প্রশ্ন করেন। সে প্রশ্নে যাবার আগে ঘাটার চর ঘটনা এবং সংশ্লিষ্ট সাক্ষীর জবানবন্দী বিষয়ে জেনে নেয়া দরকার।
ঘাটার চর ঘটনার অভিযোগ বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বিবরন : ১৯৭১ সালের ২৫ নভেম্বর আব্দুল কাদের মোল্লা ৬০-৭০ জন রাজাকার আল বদর বাহিনী নিয়ে ঘাটার চরে হামলা চালায়। এসময় তারা ওসমান গনি এবং গোলাম মোস্তফা নামে দুজন মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। এছাড়া দুটি গ্রামে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অসংখ্য মানুষ হত্যা করে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষে তিন জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাদের একজন হলেন আব্দুল মজিদ পালোয়ান। তিনি বলেছেন ২৫ নভেম্বর সকালে তাদের গ্রামের উত্তর দিক থেকে গুলি আসতে লাগল। তিনি ঘটনা জানার জন্য যেদিক থেকে গুলি আসতে লাগল সেদিকেই অগ্রসর হন।
বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিয়া এটর্নি জেনারেলকে প্রশ্ন করেন আর্মি আসা এবং গুলির আসার শব্দে সবাই যাচ্ছে একদিকে আর সাক্ষী যাচ্ছে যেদিক থেকে গুলি আসচে সেদিকে। এটা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব কি-না। সেসময় সাক্ষীর বয়স কত ছিল?
এটর্নি জেনারেল বলেন ১৬। বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিয়া বলেন, ১৫/১৬ বছরের একটি ছেলের পক্ষে আর্মি আসার খবর পেয়ে সেখানে দাড়িয়ে থাকা এবং গুলি যেদিক থেকে আসছে সেদিকে এগিয়ে যাওয়া কি সম্ভব?
এটর্নি জেনারেল বলেন, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা । তাছাড়া যুদ্ধ তখন শেষ পর্যায়ে। তাই এটা সম্ভব ছিল।
বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিয়া বলেন, আসামী পক্ষের আইনজীবী দাবি করেছেন আপনারা যে মৃত্যুদণ্ড এবং খালাস দেয়া অভিযোগে শাস্তি দাবি করেছেন তার পক্ষে প্রমান করতে হবে যে, ওই বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের রায় পারভারস ছিল। সাধারনত রায় পারভারস না হলে আমরা হস্তক্ষেপ করিনা।
এ পর্যায়ে আজকের মত শুনানীর শেষ হয়।
আসামী পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাককে যুক্তি উপস্থাপনে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান, অ্যাডভোকেট শিশির মো : মনির, অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ আলী চৌধুরী প্রমুখ ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন