রাষ্ট্রপক্ষের আরো তিনজন সাক্ষীকে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে হাজিরের জন্য সমন জারির আবেদন করা হয়েছে আসামী পক্ষ থেকে। এরা হলেন সুমতী রানী মন্ডল, সমর মিস্ত্রী এবং আশিষ কুমার মন্ডল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আজ এ আবেদন পেশ করা হয়।
তদন্ত কর্র্মকর্তার কাছে প্রদত্ত যে ১৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দী তাদের অনুপস্থিতিতে আদালত মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহন করেছেন উক্ত তিনজনই সেই ১৫ জনের অন্তর্ভুক্ত।
আবেদন বিষয়ে আজ শুনানী অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে।
এর রাগে রাষ্ট্রপক্ষের দুজন সাক্ষীকে মাওলানা সাঈদীর পক্ষে হাজিরের জন্য সমন জারির আবেদন করা হয়েছিল। তারা হলেন গণেশ চন্দ্র সাহা এবং সুখরঞ্জন বালী। এরাও ১৫ জনের জনের অন্তর্ভুক্ত।
ট্রাইব্যুনাল এ আবেদন বিষয়ে আদেশে বলেছিলেন আসামী পক্ষ যাকে খুসী সাক্ষী হিসেবে হাজির করতে পারে কিন্তু কোর্ট থেকে এ বিষয়ে কোন সমন জারি করা হবেনা। এদের মধ্যে শহীদ ভাগীরথী সাহার ছেলে গণেশ চন্দ্র সাহা গত ২৩ অক্টোবার ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে মাওলানা সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
এদিকে আগামীকাল সোমবার মাওলানা সাঈদীর মামলায় আর্গুমেন্ট বা যুক্তিতর্ক শুরু হবার জন্য নির্ধারিত রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের জন্য প্রথমে আর্গুমেন্ট পেশ করার কথা রয়েছে।
মাওলানা সাঈদীর পক্ষে গতকাল এ বিষয়ে একটি আবেদন করা হয়েছে । সেটি হল আসামী পক্ষকে প্রথমে আর্গুমেন্ট পেশ করার সুযোগ দেয়া হোক।
গত ২০ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালে একটি আবেদন পেশ করা হয়। আবেদনে বলা হয় মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ৪৬ জন সাক্ষীকে হাজির করা আদৌ সম্ভব নয়। তাই ৪৬ জন সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দী দিয়েছেন তা তাদের অনুপস্থিতিতে আদালতে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহন করা হোক।
আবেদনে ৪৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনকে ঘটনার সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই ১৯ জন সাক্ষীর মধ্য থেকে ১৫ জনের জবানবন্দী সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে ২৯ মার্চ আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের দরখাস্তে ১৯ জন ঘটনার সাক্ষী হাজির করতে না পারা বিষয়ে বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করা হয়েছিল। এদের মধ্যে পাঁচজনকে হাজির করতে না পারা বিষয়ে বলা হয়েছে তারা নিখোঁজ। ১৪জনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। মাওলানা সাঈদীর পক্ষের অস্ত্রধারীদের হুমকির কারনে তারা আত্মগোপন করেছে। নিখেঁাঁজ পাঁচ জনের তিনজন গোপনে ভারতে পালিয়ে গেছে। এছাড়া একজনের স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়েছে এবং বয়স ও অসুস্থতাজনিত কারনে ভ্রমনে মৃত্যুর ঝুকি রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আশিষ কুমার মন্ডল, সুমীত রানী মন্ডল এবং সমর মিস্ত্রী সম্পর্কে রাষ্ট্রপক্ষের দরখাস্তে বলা হয়েছিল তারা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে নিখোঁজ। সম্ভবত তারা গোপনে ভারতে পালিয়ে গেছে। সেই সাক্ষীদেরই মাওলানা সাঈদীর পক্ষে হাজিরের জন্য আবেদন করা হল আসামী পক্ষ থেকে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন