Pages

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৩

আসামী পক্ষের কোন আইনজীবী যাননি ট্রাইব্যুনালে// গোলাম আযমের শুনানী পেছাল

মেহেদী হাসান, ১২/৩/১২
আজ আসামী পক্ষের কোন আইনজীবী যাননি ট্রাইব্যুনালে । ফলে আসামী পক্ষের দায়ের করা দুটি আবেদন খারিজ করে দেয়ার মাধ্যমে শেষ হয়ে যায় ট্রাইব্যুনালে কার্যক্রম। আসামী পক্ষের আইনজীবীদের কোর্টে না আসতে পারা বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল একটি আদেশে বলেছেন বাইরে  বিশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারনে হয়ত তারা  আসতে পারেননি।

জামায়াতের সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিষয়ে আর্গুমেন্ট পেশ করার কথা ছিল আসামী পক্ষের আইনজীবীদের। কিন্তু তাদের কেউ হাজির হননি  ।

আজকের  কার্যতালিকায় আসামী পক্ষের দায়ের করা দুটি আবেদনও। এর একটি হল  অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে শুনানী চার সপ্তাহের জন্য মুলতবি করা এবং অপরটি হল তদন্ত রিপোর্ট  কপি সরবরাহ করা বিষয়ে।

সকালে  আদালতের  কার্যক্রম শুরু হলে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেয়াদ আল মালুমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ডিফেন্সের কেউ আসেনি। পুরো বেঞ্চ খালি । কি করা যায়?
জেয়াদ আল মালুম মতামত দিয়ে বলেন চার্জ ফ্রেম বিষয়ে অর্ডার দেয়া উচিত।

তখন বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, আসামী পক্ষের কেউ আসতে পারেননি। আমাদের স্টাফ আসতে পারেননি। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা এসব কি  বিবেচনা  করা উচিত নয়? পরে যদি তারা এসে বলে আমরা আর্গুমেন্ট করব তখন?
জেয়াদ আল মালুম বলেন, আবেদন দুটি বাতিল করেন মাই লর্ড।
তখন  বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, আপনি বাতিলের জন্য আবেদন করেন। তারপর আমরা বিবেচনা করে দেখব কি করা যায়।
তিনি বলেন, তদন্ত  কপি চেয়ে যে আবেদন করা হয়েছে আসামী পক্ষ থেকে  তা তো এমনিতেই বাতিল হয়ে যাবে। কারণ আগেও এ  বিষয়ে আবেদনের ওপর আদেশ হয়েছে।

এরপর বিচারপতি নিজামুল হক অপর দুই বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির এবং একেএম জহির আহমেদের সাথে পরামর্শ করেন। বেঞ্চ অফিসারকে ডাকেন আদেশ লেখার  ডিকটেশন নেয়ার জন্য। 
আদেশে তিনি বলেন, আজ অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে চার্জ হেয়ারিংয়ের জন্য নির্ধারিত ছিল। আসামী পক্ষের দুটি আবেদনও ছিল। এর একটি হল তদন্ত রিপোর্ট চেয়ে আবেদন এবং অপরটি হল শুনানী চার সপ্তাহ মুলতবির আবেদন।

কিন্তু  আসামী পক্ষের কোন কাউন্সিলর আজ ট্রাইব্যুনালে আসেননি। আমাদের ধারণা বাইরে বিশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিরাজ করায় এবং এ কারনে উদ্ধুত টেনশনের  কারনে তারা হয়ত আসতে পারেননি। বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, আমি মনে করি একজন আইনজীবীর অন্তত আসা উচিত ছিল। তারা এসে তাদের আবেদনের পক্ষে কথা বললে তাদের চান্স দেয়ার কথা বিবেচনা করা যেতে পারত।

এরপর বিচারপতি নিজামুল হক বলেন,  আমি এবং অপর বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির মনে করি আগামী কাল সোমবার ১৩ মার্চ চার্জশিট বিষয়ে শুনানীর জন্য ধার্য্য করা উচিত পুনরায় । কিন্তু বিচারপতি  একেএম জহির আহমেদ মনে করেন আবেদন সরাসরি বাতিল করে দেয়া উচিত  এবং  আগামী কাল চার্জ ফ্রেমিংয়ের জন্য ধার্য্য করা  উচিত।
তিনজনের দুজন যেহেতু আগামীকাল চার্জ হেয়ারিংয়ের জন্য ধার্য্য করা বিষয়ে একমত হয়েছি তাই আগামীকাল চার্জ শুনানীর জন্য ধার্য্য করা হল।
এরপর বিচারপতি জহির আহমেদ  বেঞ্চ অফিসারকে ডেকে আদেশ লেখার জন্য ডিকটেট করেন । তিনি বলেন,  আমি মনে করে তাদের আবেদনের পক্ষে ন্যূনতম সম্মান দেখিয়ে আসামী পক্ষের কাউকে না কাউকে আসা উচিত ছিল ।

আদেশ লেখার পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেয়াদ আল মালুম বলেন, বিশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারনে তারা আসতে পারেনি  এ কথাটি বাদ দেয়া হোক।
তখন বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, এ ঘটনাতো সব সময় ঘটেনা। আজ যদি সব কিছু স্বাভাবিক থাকত এবং তারা না আসতেন তাহলে এক কথা ছিল। কিন্তু একদিন যখন প্রশ্ন উঠবে কেন তারা আসতে পারেনি এবং কেন এটি স্বাভাবিকভাবে নেয়া হল তখন এর উত্তর কি হবে? তাই এটি উল্লেখ করা হল।

তখন রাষ্ট্রপক্ষের অপর আরেক আইনজীবী বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি কথাটি বাদ দিয়ে যানবাহন সমস্যার কথাটি লেখা হোক। ট্রাইব্যুনাল বলেন, বিবেচনা করা হবে।  প্রসিকিউটর সাইফুল ইসলাম বলেন, কেউ কোথাও যে যাতায়াত করতে পারছেনা  বিষয়টি সেরকম নয়। মানুষ চলাফেরা করছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন