Pages

বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৩

পঞ্চম সাক্ষীর বিরুদ্ধেও চুরির অভিযোগ/// ভানু সাহার সাথে বাস করত মোসলেম মাওলানা

মেহেদী হাসান, ২৭/১২/২০১১
আজ পঞ্চম সাক্ষী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দিলেন মাহতাব উদ্দিন হাওলাদার। সাক্ষ্য শেষে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীদের জেরায় তার বিরুদ্ধে কাঠ চুরির অভিযোগের বিষয়টি বের হয়ে আসে।

জেরার সময় প্রশ্নের মাধ্যমে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী আদালতকে জানান, মাহতাব উদ্দিন  এবং তার অন্য ভাইয়েরা মিলে টেংরাটিলার শাহাদাত হোসেনের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমান কাঠ চুরি করে। । পরে পুলিশের সহায়তায় তার বাড়ি ঘেরাও করে সে কাঠ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত কাঠ মামলার বাদী এবং এক নম্বর সাক্ষী মাহবুবুল আলম হাওলাদারের  জিম্মায় রাখা হয়। পরে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে সে  কাঠ  শাহাদাত হোসেনকে ফেরত দিয়ে বিষয়টি সুরাহা করা হয়। এসব বিষয় উল্লেখ করে সাক্ষীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জবাব দেন ঘটনা সত্য নয়।
এর আগে মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়া চারজনের মধ্যে তিন জনই ছিল  চুরির মামলার আসামী।
এদিকে  জেরার সময় সাক্ষী মাহতাব উদ্দিন হাওলাদার জানান, পাড়েরহাটে বিপদ সাহার  মেয়েকে নিয়ে বিপদ সাহার বাড়িতেই বাস করতেন  পিস কমিটির নেতা মোসলেম উদ্দিন মাওলানা। মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী তাকে প্রশ্ন করেন ভানু সাহাকে মোসলেম মাওলানা বিয়ে করে জামাই হিসেবে থাকতেন কি-না।  তখন মাহতাব উদ্দিন বলেন, বিয়ে করেছিল কিনা বলতে পারবনা। তবে গন্ডগোলের সময় ভানু সাহাকে নিয়ে তিনি  থাকতেন বিপদ সাহার বাড়িতে।  মোসলেম উদ্দিন মাওলানা বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এবং তিনি   পিরোজপুর ওলামা লীগের সভাপতি দাবি করে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা প্রশ্ন  করলে   বিষয়টি সত্য নয় বলে জবাব দেন সাক্ষী মাহতাব উদ্দিন।

মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার মধ্যে বিপদ সাহার মেয়ে  ভানুসাহা একটি  আলোচিত চরিত্র। এর আগে চতুর্থ সাক্ষী  সুলতান আহমদ হাওলাদার মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে বলেছিলেন মাওলানা সাঈদী ভানু সাহাকে নিয়মিত ধর্ষন করতেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে।  তারো আগে দ্বিতীয় সাক্ষী রুহুল আমিন নবিন আদালতে মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়ে বলেছিলেন ভানু সাহা, ছবি রায়সহ আরো অনেকে  মেয়েদের শান্তি কমিটি, রাজাকার  এবং পাক আর্মি আটকে রেখে উপর্যপরি ধর্ষন করত মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে।   দেশ স্বাধীনের পর ভানু সাহা ভারতে   চলে যায়।   গতকাল মাহতাব উদ্দিন জেরার সময় বললেন ভানু সাহাকে নিয়ে তারই বাড়িতে বাস করতেন  শান্তি কমিটির নেতা মোসলেম মাওলানা।


জেরার সময় পঞ্চম সাক্ষী মাহতাব উদ্দিন হাওলাদার জানান, জন্ম সনদে তার  জন্ম তারিখ ১৯৬৩ সাল লেখা রয়েছে।  এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনে তার জন্ম তারিখ লেখা রয়েছে ১৯৫৯ সাল। বর্তমানে তিনি তার বয়স ৫৫ বছর হিসেবে উল্লেখ করেছেন জবানবন্দী প্রদানের সময়।  তাছাড়া সাক্ষী  মাহতাব উদ্দিন পাড়েরহাট রাজলক্ষী উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত ছাত্র ছিলেন। কিন্তু তিনি তার বাড়ি থেকে ১২/১৩ মাইল দূরে বালিপাড়া ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে নিয়মিত ছাত্র হিসেবে ১৮৭৪ সালে নবম শ্রেণীর ছাত্র হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করেন। যদিও তিনি ঐ স্কুলের নিয়মিত ছাত্র ছিলেননা বলে স্বীকার করেছেন। মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান ১৯৭১ সালে তিনি একজন নাবালক ছিলেন । তিনি ১৯৭১ সালের  যেসব ঘটনা বর্ণনা করেছেন তা তার পক্ষে দেখা  এবং     জানান সম্ভব নয়।

সাক্ষী মাহতাব উদ্দিন  তার জবানবন্দীতে বলেন,  শান্তি কমিটির নির্দেশে রাজাকার বাহিনী উমেদপুর গ্রামে হিন্দুদের এলাকায় অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, নারী ধর্ষন, নারীদের পাক হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দেয় । মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির এবং সাধারন মানুষ হত্যা করে।
সাক্ষী বলেন, ১৯৭১ সালের ২ জুন আমি পাড়েরহাট বাজারে যাই। তখন  শান্তি কমিটির দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমানে সাঈদী, দানেশ আলী মোল্লা, সেকেন্দার শিকার, মাওলানা মোসলেম উদ্দিন সশস্ত্র রাজাকার এবং পাক আর্মিদের  নিয়ে উমেদপুর গ্রামে যেতে দেখি। তারা ঐ গ্রামের ২০/২২টি   ঘরে আগুন দেয়। বিশাবালীকে নারকেল গাছের সাথে বেঁেধ পেটায়। তারপর দেলোয়ার হোসেন শিকদার উর্দুতে কিছু বলার পর এক রাজাকার তাকে গুলি করে মারে।  বিকালে শুনি মাহবুবুল আলম হাওলাদার (মামলার বাদী) ঘর লুট করে সোনাদান সব নিয়ে গেছে।
সাক্ষী বলেন, জুন মাসের মাঝামাঝি সময় আমি একদিন পাড়েরহাট বাজারে যাই। সেদিন ছিল হাটের দিন। আমি দেখতে পাই তৈয়ব আলী মিস্ত্রিকে  দিয়ে মদন সাহার ঘর ভেঙ্গে রাজাকাররা দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমানে সাঈদীর শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যায়।
সাক্ষীর জবানবন্দী শেষে তাকে জেরা শুরু   করেন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা।
পঞ্চম সাক্ষীকে মাহতাব উদ্দিনকে জেরা করেন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম এবং  মনজুর আহমদ আনছারী। তাদের সহায়াতা করেন  তাকে সহায়তা করেন সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী তাজুল ইসলাম, কফিলউদ্দিন চৌধুরী,  ব্যারিস্টার তানভির আল আমিন, মুন্সি আহসান কবির প্রমুখ।

আইনজীবী: পিরোজপুর মহকুমায় সর্বপ্রথম রাজাকার বাহিনী কবে গঠন হয় বলতে পারবেন?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: আপনার  এলাকা টেংরাটিলাতে কবে রাজাকার বাহিনী  কবে গঠিত হয় জানা আছে?
সাক্ষী:  টেংরাটিলায় কোন রাজাকার বাহিনী ছিলনা।
আইনজীবী: টেংরাটিলায় কোন রাজাকার ছিল?
সাক্ষী: একজন ছিল।
আইনজীবী: বরিশাল রাজাকার এডজুন্যান্ট কে ছিলেন বলতে পারবেন?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: পিরোজপুর মহকুমায় রাজাকার বাহিনীর প্রধানের নাম বলতে পারবেন?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: পূর্ব পাকিস্তান  পিস কমিটি  কবে গঠিত হয় বলতে পারবেন?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: কোথায় গঠিত হয় তাও জানা নেই?
সাক্ষী: না জানা নেই।
আইনজীবী: শান্তি কমিটির  প্রধান কে ছিল তাও জানা নেই?
সাক্ষী: জানা নেই।
আইনজীবী: বরিশাল কবে কোথায় বসে শান্তি কমিটি গঠিত হয়?
সাক্ষী: জানা  নেই।
আইনজীবী: এই কমিটির সভাপতি সেক্রেটারি  কারা ছিলেন জানা আছে?
এ পর্যায়ে আদালত মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীকে বলেন, এত কিছুর কি দরকার আছ। তখন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, সাক্ষীর কোনটাই জানা নেই। কিন্তু ৪০ বছর আগে কবে পাক হানাদার বাহিনী পারের হাটে আসছে, কবে কোথায় কার নেতৃত্বে হামলা হয়েছে তা সব নির্দিষ্ট করে বলে দিতে পারছে।  তখন আদালত বলেন, ঠিক আছে জিজ্ঞেস করেন।
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: বরিশাল জেলার উল্লেখযোগ্য কোন শান্তি কমিটির নেতার নাম মনে  আছে?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: বরিশালের এ কে ফয়জুল হকের নাম শুনেছেন?
সাক্ষী: হ্যা।
আইনজীবী: স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে তার অবস্থান কি ছিল বলতে পারবেন?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: পিরোজপুর মহকুমায় কবে কোথায়  শান্তি কমিটি গঠিত হয় বলতে পারবেন?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: সভাপতির নাম বলতে পারবেন?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: ১৯৭১ সালের ৪ঠা মে পাক আর্মি সর্বপ্রথম পিরোজপুর আসে?
সাক্ষী:  ৪ঠা মে নয় ৩রা মে।
আইনজীবী: পারের হাট আসে ৮ মে?
সাক্ষী:  ৭ মে।
আইনজীবী: টেংরাটিলার শাহাদাত হোসেনকে চেনেন?
সাক্ষী: চিনতাম। তিনি মারা গেছেন।
আইনজীবী: আপনি এবং আপনার ভাইয়েরা মিলে শাহাদাত হোসেনের বাড়ি থেকে কাঠ চুরি করেন। পরে পুলিশের সহায়াতয় আপনাদের বাড়ি ঘেরাও করে সে কাঠ উদ্ধার করে ।
সাক্ষী: সত্য নয়।
(কাঠ চুরির অভিযোগ বিষয়ে প্রশ্নের  শুরুতে আদালত আপত্তি জানিয়ে বলেন এ বিষয়ে কোন ডকুমেন্ট জমা দেয়া হয়েছে কিনা। মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীর আইনজীবী আদালতকে জানান এ বিষয়ে তাদের কাছে কিছু ডকুমেন্ট আছে । চুরি করা কাঠ  পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার করে সালিশের মাধ্যমে ফেরত দেয়া হয়।)
আইনজীবী: ঐ চোরাই মাল উদ্ধার করে পরে তা  এই মামলার বাদী  এবং এক নং সাক্ষী মাহবুবুল আলম হাওলাদারের  জিম্মায় রাখা হয় কাঠের মালিক নির্ধারনের আগ পর্যন্ত ।
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী: মালামাল পরে শাহাদাত হোসেনকে ফেরত দেয়া হয়।
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী: আপনার পিতার চার স্ত্রী।
সাক্ষী: হ্যা।
আইনজীবী : আপনি দুটি  বিয়ে করেছেন?
সাক্ষী: হ্যা।
আইনজীবী: আপনি পাড়েরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক?
সাক্ষী: হ্যা।
আইনজীবী: আপনার ছেলে জিয়ানগর ছাত্র লীগের সভাপতি।
সাক্ষী: হ্যা।
আইনজীবী: স্বাধীনতা যুদ্ধকালে আপনি স্কুলের ছাত্র ছিলেন?
সাক্ষী: হ্যা।
আইনজীবী: কোন স্কুলের?
সাক্ষী: পাড়েরহাট রাজলক্ষী মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
আইনজীবী: বালিপাড়া ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় আপনার বাড়ি থেকে ১২/১৩ মাইল দক্ষিনে।
সাক্ষী: হ্যা।
আইনজীবী: আপনি ঐ স্কুলের নিয়মিত ছাত্র ছিলেননা।
সাক্ষী: সত্য।
আইনজীবী: ১৯৭৪-৭৫ সালে এই স্কুলের একজন নিয়মিত ছাত্র না হওয়া সত্ত্বেও আপনি নবম শ্রেণীতে নিয়মিত ছাত্র হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করেন এসএসসি পরীক্ষার জন্য?
সাক্ষী: হ্যা।
আইনজীবী: ঐ নিবন্ধে আপনার জন্ম তারিখ লেখা আছে ৬ জুন ১৯৫৯ সাল।
সাক্ষী: হেডমাস্টার কি লিখেছিল তা আমার মনে নেই।
আইনজীবী: জন্ম নিবন্ধন ফরমে আপনার জন্ম তারিখ লেখা আছে ১৫/৯/১৯৬৩ ।
সাক্ষী: স্মরণ নেই। (আমি ১৯৭৪-৭৫ সালে রেজিস্ট্রেশন করলেও এসএসসি পাশ করি ১৯৭৯ সালে। সে অনুযায়ী জন্ম নিবন্ধন ফরমে জন্ম তারিখ লেখা হয়। আমি যখন এসএসসি পাশ করি তখন আমার ছেলে ফাইভে পড়ে।)
আইনজীবী:
আইনজীবী:  এই আদালতে চবানবন্দী দেয়ার আগে অন্য কোথাও  জবানবন্দী দিয়েছেন?
সাক্ষী: হ্যা। ২০০৮ সালে পিরোজপুর  জুড়িশিয়াল মেজিস্ট্রেট ্বরে কাছে।
আইনজীবী:  কত  তারিখে বা কোন মাসে স্মরণ আছে?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: ২০০৮ সালে জবানবন্দীর আগে মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে অন্য কোথাও কোন অভিযোগ করেছেন?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী:  এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দী দিয়েছেন তাতে কি সই করেছিলেন?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী:আপনি আদালতে দেয়া জবানবন্দীতে দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমানে সাঈদী   বললেন। ১৯৭১ সালে মাওলানা সাঈদীর নাম দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ছিল। শিকদার ছিলনা ।
সাক্ষী: সত্য নয়। দেলোয়ার হোসেন শিকদার ছিল।
আইনজীবী:  ওনার নাম সবসময়ই দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী ছিল।
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী:   ‘বর্তমানে সাঈদ’ কথাটি আপনি আগে কোথাও বলেননি। শিকদার কথাটিও বলেননি।
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী: মাওলানা সাঈদী সাহেবকে কতদিন ধরে চেনেন?
সাক্ষী: ১৯৭০ সাল থেকে।
আইনজীবী: কিভাবে চেনেন?
সাক্ষী: পাড়েরহাট বাজারের ফুটপাথে বসে তেল নুন  বিক্রি করত সে কারনে  চিনি।
আইনজীবী: দানেশ আলী মোল্লা চেয়ারম্যান ছিলেন
সাক্ষী: হ্যা: পরে শান্তি কমিটির সাথেও জড়িত হয়।
আইনজীবী: সেকেন্দার শিকদার কি করত?
সাক্ষী: জমিজমা ছিল।  তা দেখা শুনা করত। পাড়েরহাট বাজারে একটি দোকান ছিল তা দেখাশুনা করত। আর সকাল বিকাল পাড়েরহাট বাজারে ঘোরাঘুরি করত।
আইনজীবী: সেকেন্দার শিকদার খুব প্রভাবশালী ছিলেন?
সাক্ষী: জমিজমা তেমননা। তবে তিনি  খুব সম্মানিত লোক ছিলেন।
আইনজীবী: মোসলেম মাওলানা কি করত?
সাক্ষী: জমিজমা দেখাশোনা করত। গন্ডগোলের সময় পাড়েরহাট বিপদ সাহার বাড়িতে  থাকত।
আইনজীবী: বিপদ সাহার মেয়েকে বিয়ে করে জামাই হিসেবে থাকত?
সাক্ষী: বিয়ে করেছিল কিনা জানিনা। তবে ভানু সাহাকে নিয়ে থাকতেন।
আইনজীবী: স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পিরোজপুরে পাক বাহিনী আসার খবর পেয়ে অধিকাংশ হিন্দু ভারতে চলে যায়?
সাক্ষী: সত্য।
আইনজীবী: মোসলেম মাওলানা পিরোজপুর বা জিয়ানগর ওলামা লীগের সভাপতি।
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী: তিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী: পিরোজপুর  শত্রুমুক্ত হবার সময় পিরোজপুর সদর থানা কে সর্বপ্রথম দখল করেন?
সাক্ষী: মেজর জিয়াউদ্দিন।
আইনজীবী: পাড়েরহাট যখন রুহুল আমিন নবিনের নেতৃত্বে ছিল তখন  কোন রাজাকার আল বদর, শান্তি কমিটির  লোকজন মারা যায়নি?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: ঐ সময় রজাকার, আলবাদর, বা শান্তি কমিটির কাউকে ধরে  সন্দুরবন কিলিংস্কোয়াডে পাঠানো হয়নি হত্যার জন্য।
সাক্ষী: পাঠানো হয়নি
আইনজীবী:আপনি মাওলানা সাঈদী, মোসলেম মাওলানা, সেকেন্দার শিকাদর, দানেশ আলী মোল্লাসহ অন্যান্যদের নিয়ে এপ্রিল মাসের শেষের দিকে রাজাকার বাহিনী গঠন এবং তার ২/৩দিন পরে রাজাকার বাহিনী গঠনের যে কথা  আদালতের কাছে জবানবন্দিেেত বলেছেন তা তদন্ত কর্মকর্তার  কাছে দেয়া জবানবন্দীতে বলেননি।
সাক্ষী: খেয়াল নেই।
আইনজীবী: একথা পিরোজপুর মেজিস্ট্রেট এর কাছেও বলেননি।
সাক্ষী:  জানা নেই।
আইনজীবী: আপনি ১৯৭১ সালের ২ জুন পারের হাট অবস্থানের যে কথা বলেছেন তাও তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বলেননি।
সাক্ষী: আমি বলেছি। তবে কি  লিখেছে তা জানা নেই।
আইনজীবী: হরেন্দ্রনাথ, সতিশ বালা, চিত্ত তালুকদার, রবি তালকদারের ঘরে  লুটপাট, আগুন দেয়ার কথাও তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বলেননি।
সাক্ষী:  বলেছি কি- না খেয়াল নেই।
আইনজীবী: ২ জুন মাওলানা সাঈদীসাহেব সহ অন্যান্যদের   উমেদপুর গ্রামের দিকে যাবার  যে কথা আদালতে বলেছেন তাও  আগে  বলেননি তদন্ত কর্মকতার কাছে।
সাক্ষী: খেয়াল নেই।
আইনজীবী: লুটপাটের পর মালামাল ভাগাভাগি  এবঙ ২০/২২টি ঘরে আগুন দেয়ার কথাও বলেননি আগে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া জবানবন্দিতে।
সাক্ষী: স্মরণ নেই।
আইনজীবী: বিশাবালীকে গুলি  মারতে দেখার কথাও বলেননি।
সাক্ষী: বলেছি।
আইনজীবী: মাহবুবুল আলমের ঘরে লুটপাটের কথাও মেজিস্ট্রেট এর কাছে বলেননি।
সাক্ষী: আমি দেখি নাই । শুনেছি। শোনা কথাও বলেছি কিনা স্মরন নেই।
আইনজীবী: মদন সাহার ঘর ভেঙ্গে নিয়ে যাবার  কথা তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি।
সাক্ষী: বলেছি।
আইনজীবী: মেজিস্ট্রেট এর কাছে মদন সাহার নামও উল্লেখ করেননি।
সাক্ষী: খেয়াল নেই।
আইনজীবী: দেশ স্বাধীন হবার পর আপনি মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেননি।
সাক্ষী: না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন