Pages

বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০১৩

অভিযোগ নয় রাষ্ট্রপক্ষের মিথ্যাচার প্রমানিত হয়েছে-আসামী পক্ষ


২৪/১/২০১৩
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলায় আসামী পক্ষের পুনরায় যুক্তি উপস্থাপন অব্যাহত রয়েছে। আজ মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ বিষয়ে যুক্তি  উপস্থাপন শেষ করেছেন অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম। এরপর আইনী বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন আসামী পক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক

পুনরায় যুক্তি উপস্থাপনের শুরুতে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক  ট্রাইব্যুনালের নতুন চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার আজ এখানে বসার কথা ছিলনা। কিন্তু   বাস্তবতা হল আপনি  বসেছেন। গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এ মামলার রায় হবে এরকমটিই ধারনা ছিল। কিন্তু ম্যান পজেস গড ডিসপজেস। এসময় মুচকি হাসেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান এটিএম ফজলে কবির।

ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমানে যে আইনে   সাঈদী সাহেবের বিচার চলছে সে আইনটি হয়েছিল ১৯৫ জন পাকিস্তানী সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের জন্য। কোন বেসামরিক ব্যক্তিকে এ আইনের  অধীনে বিচারের কোন উদ্দেশ্য বা ইচ্ছা  কোনমতেই ছিলনা। এমনকি বেসমারিক ব্যক্তিকে যাতে এ আইনের অধীনে বিচার করা না হয় সেজন্য আইনটির বিল থেকে ইনকুডিং এনি পারসন শব্দ দুটি বাদ দেয়া হয়। বেসামরিক ব্যক্তিকে যাতে এ আইনের আওতায় আনা না হয় এবং শুধুমাত্র পাকিস্তানী সেনা কর্মকর্তাদের বিচার করাই যে এ আইনের লক্ষ্য ছিল সে বিষয়ে সংসদে তখন আইনটি পাশের পূর্বে যে আলোচনা হয়েছিল তা পড়ে শুনান ব্যারিস্টার  আব্দুর রাজ্জাক।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন,  সংসদের আলোচনা পড়লে এটা স্পষ্ট বোঝা যায় বেসামরিক ব্যক্তিদের বিচারের কোন উদ্দেশ্যই ছিলনা ১৯৭৩  সালের আইনের। কারণ  বেসামরিক ব্যক্তিদের বিচারের জন্য ১৯৭২ সালে দালাল আইন করা হয়েছিল।

অভিযোগ নয়  রাষ্ট্রপক্ষের মিথ্যাচার প্রমানিত হয়েছে :
 মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আনিত ১৯টি অভিযোগ খন্ডন করে  তিনদিনেরও বেশি পুনরায় যুক্তি পেশ করেছেন অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম। অভিযোগ খন্ডন করে যুক্তি পেশ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন অপর আইনজীবী তাজুল ইসলাম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ যে অভিযোগ এনেছে তার সবগুলো আমরা মিথ্যা প্রমান করতে সমর্থ হয়েছি। প্রসিকিউশন  থেকে আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছিল তা ছিল শতাব্দীর নিকৃষ্ট মিথ্যাচার । এসব অভিযোগ প্রমানিত হয়নি। বরং তারা যে এ মামলায় মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে সেটা প্রমানিত হয়েছে। মিথ্যাচারও তারা যোগ্যতার সাথে করতে পারেনি। নির্লজ্জভাবে আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে তারা এবং নির্লজ্জভাবে ধরা খেয়েছে মিথ্যাচার বিষয়ে।
যুক্তি পেশ করার সময়  ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক এবং মিজানুল ইসলামকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট মনজুর আহমেদ আনসারী, ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন, অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।
ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপ কেলেঙ্কারির জের ধরে  ট্রাইব্যুনাল-১ এ নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগের প্রেক্ষাপটে মাওলানা সাঈদীর মামলায় পুনরায় পাঁচদিন শুনানীর জন্য ধার্য্য করেন ট্রাইব্যুনাল। আসামী পক্ষের জন্য বরাদ্দ করা নির্ধারিত তিনদিন পার হয়ে গেলেও তাদের যুক্তি পেশ শেষ না হওয়ায় তা অব্যাহত রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি  এটিএম ফজলে কবির গতকাল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাককে বলেন আশা করছি আগামী রোববারের মধ্যে আপনরা শেষ করবেন। জবাবে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রোববারের মধ্যে শেষ করা কঠিন হয়ে যাবে। শুনানীর সময় ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন এবং বিচারপতি আনোয়ারুল হক উপস্থিত ছিলেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন