Pages

বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০১৩

গোলাম আযম নিজামী সাঈদীর চার্জ ফ্রেমিং আদেশ বেলজিয়াম থেকে পাঠানো হয়েছে-আসামী পক্ষ


১৯/১২/১২ বুধবার
স্কাইপি কেলেঙ্কারির জের ধরে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের বিচার পুনরায় শুরু করার আবেদন  করা হয়েছে । আসামী পক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক  আজ   আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (১)  এ আবেদন জমা দেন । আগামী সোমবার এ বিষয়ে শুনানীর জন্য ধার্য্য  করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচারও পুনরায় শুরুর আবেদন আগামী  ২৪ তারিখের আগেই দাখিল করা হবে আসামী পক্ষ থেকে। ট্রাইব্যুনাল বলেছেন সব আবেদন জমা হওয়ার পর ২৪ তারিখ সোমবার  একত্রে শুনানী গ্রহণ করা  হবে।

জালিয়াতির এমন নজির বিচার বিভাগের  ইতিহাসে নেই :
অধ্যাপক গোলাম আযমের  বিচার পুনরায় শুরুর আবেদনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে   ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন,  এ বছর ১৩ মে অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দিয়েছিলেন । ১২ মে বেলজিয়ামের ব্রাসেলস থেকে ড. আহমেদ জিয়া উদ্দিন চার্জ গঠন বিষয়ে একটি ড্রাফট পাঠান ট্রাইব্যুনাল থেকে পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের কাছে। বিচারপতি নিজামুল হক ১৩ তারিখ যে চার্জ গঠনের আদেশ দিলেন সেই আদেশের সাথে ১২ তারিখের ড্রাফটের হুবহু মিল রয়েছে। ১২ তারিখের ড্রাফটে তিনি শুধু তারিখ এবং  নাম্বার পরিবর্তন করে বসিয়ে দিয়েছেন। দুনিয়ার ইতিহাসে, বিচার বিভাগের ইতিহাসে  জালিয়াতির এমন নজির আর নেই। সেই কারনে আমরা তার বিচার পুনরায় শুরুর আবেদন করেছি। কারণ কোন মামলার বিচার কার্যক্রম  শুরু হয় চার্জ ফ্রেমিং থেকে। সেই চার্জ ফ্রেমিংয়ের ক্ষেত্রেই মহা জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।

ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন,  বিচার নিয়ে এ ট্রাইব্যুনালে যা হয়েছে তা মানুষ জানলে বিস্মিত হবে। আসামীকে হত্যার জন্য বিচারপতি-সাক্ষী এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর মধ্যে এমন আতাতের নজির আর নেই। স্কাইপি সংলাপ এবং ইমেইলের যে ডকুমেন্ট আমরা দিয়েছি তা কেউ  অস্বীকার করতে পারবেনা। দৈনিক আমার দেশে পাঁচ দিন ধরে বিচারপতির স্কাইপি সংলাপ  প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এমন একজন ব্যক্তি নেই যিনি এটা অস্বীকার করেছে।
তিনি বলেন আজ  অধ্যাপক গোলাম আযমের মামলা পুনরায় বিচার শুরুর আবেদনের সাথে ৬০০ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট জমা দিয়েছি। আরো ৫০০ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট জমা দেব আমরা। মাওলানা  মতিউর রহমান নিজামী এবং মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচারও পুনরায়  শুরুর আবেদন আমরা  প্রস্তুত করছি।

পুনরায় বিচারের আবেদন পেশ করার সময় ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ট্রাইব্যুনালে  বলেন বিচারাপতি নিজামুল হক এই ট্রাইব্যুনালে আদেশ দিয়ে স্বীকার করেছেন  তিনি ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনসহ অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথে কথা বলেছেন।

আজ  মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সাক্ষীর জেরা শুরু হবার কথা ছিল।  সকালে অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালে বলেন, মাওলানা নিজামীর বিচার পুনরায় শুরুর আবেদন করব আমরা। সেজন্য আমাদের সময় দরকার।  আগামী রোববার আবেদন জমা দিতে পারব আমরা। সে পর্যন্ত মাওলানা নিজামীর  মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ মুলতবি রাখা হোক। ট্রাইব্যুনাল আবেদন গ্রহণ করে রোববার পর্যন্ত মাওলানা নিজামীর বিচার মুলতবি করেন।

একই দিন মাওলানা নিজামীর বিচারও পুনরায় শুরুর আবেদন জমা দেয়া হতে পারে বলে জানান আসামী পক্ষ। এছাড়া অধ্যাপক গোলাম আযমের মামালায় সাক্ষ্য গ্রহণ ২৪ তারিখ পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।

অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম সকালে মুলতবি আবেদন পেশ করার সময়  ট্রাইব্যুনালে বলেন, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং মাওলানা সাঈদীর চার্জ ফ্রেমিংয়ের ক্ষেত্রেও  বিদেশ থেকে  ড্রাফট পাঠানো হয়েছে  এবং সে মোতাবেক তাদের চার্জ ফ্রেমিং আদেশ দেয়া হয়েছে।

ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি আনোয়ারুল হক বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
আসামী পক্ষে অন্যান্য আইনজীবীর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মিজানুল ইসলাম, মনজুর আহমেদ আনসারী, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক, মতিউর রহমান আকন্দ, শিশির মো: মনির প্রমুখ।
রাষ্ট্রপক্ষে চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন