Pages

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৩

মোবারক হোসেন নামে আরেক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন ট্রাইব্যুনালে

মেহেদী হাসান, ২৩ এপ্রিল, ২০১৩
হাজি মো: মোবারক হোসেন নামে আরেক ব্যক্তির বিরুদ্ধে  চার্জ গঠন করা হল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ। ১৯৭১ সালে হত্যা, নির্যাতন অপহরনসহ চার ধরনের মোট পাঁচটি মানবতা বিরোধী অভিযোগে তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হল। হাজি মো: মোবারক হোসেনের বাড়ি ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়া জেলার  আখাউড়ায়। 

হাজী মো: মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়েছে সেগুলো হল  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানাধীন টানমান্দাইল ও জাঙ্গাইল গ্রামে  ৩৩ জনকে হত্যা,  শহীদ আশুরঞ্জন দেবকে কালী বাড়ি রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা, শহীদ আব্দুল খালেককে ছাতিয়ান গ্রাম থেকে অপহরণ করে হত্যা, সদর থানার খাদেম হোসেন খানকে অপরহরণ করে নির্যাতন এবং  খরমপুর গ্রামে আব্দুল মালেক ও আমীর পাড়া  গ্রামের মো. সিরাজকে অপহরণ করে নির্যাতন।

চেয়ারম্যান এটিএম ফজলে কবিরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ আজ  চার্জ গঠনের আদেশ পাশ করেন। আগামী ১৬ মে রাষ্ট্রপরে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

এ নিয়ে ট্রাইব্যুনাল-১ এবং ট্রাইব্যুনাল-২ এ মোট ১০ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে পাঁচ জনের বিচার শেষ হয়েছে। তিনজনের বিরুদ্ধে রায় প্রদান করা হয়েছে।

হাজি মো: মোবারক হোসেন বর্তমানে ট্রাইব্যুনালের অধীনে কারবন্দী রয়েছেন। চার্জ গঠন আদেশ উপলক্ষে গতকাল তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা  হয়। চার্জ গঠন আদেশ চূড়ান্তকরনের পূর্বে ট্রাইব্যুনাল তাকে প্রশ্ন করেন আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনানো  হল। এ বিষয়ে আপনার মতামত কি? তখন  হাজি মোবারক হোসেন বলেন, আমি  সম্পূর্ণ নির্দোষ।  আমি কোন রাজাকার ছিলামনা। আমার গ্রামের একজন লোকও যদি প্রমান করতে পারে আমি রাজাকার ছিলাম তাহলে আমি আপিল করবনা ।
হাজি মোবারক হোসেন আরো বলেন, আমি জানতাম রাজাকারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন মুক্তিযোদ্ধারা কিন্তু আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে একজন রাজাকার।


হাজী মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়ার চিফ জুড়িশিয়াল মেজিস্ট্রেট এর কাছে অভিযোগ করেন খোদেজা বেগম নামে জনৈক মহিলা। অভিযোগ মতে  খোদেজা বেগমের পিতা   আব্দুল খালেক ছিলেন আনছার কমান্ডার ।   যুদ্ধের সময় তার পিতা গ্রামে আসার পর  তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যা ঘটনায় হাজী মোবারককে অভিযুক্ত করে খোদেজা বেগম মামলা করেন।

মামলা দায়েরের পর হাজী মোবারক হোসেন হাইকোর্টে  হাজির হয়ে প্রথমে ছয় মাসের জামিন পান। এরপর কয়েকবার জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০১১ সালের ২৪ জুলাই তাকে সংশ্লিষ্ট মেজিস্ট্রেট এর কাছে আত্মসমর্পনের নির্দেশ দিলে তিনি  ঐ বছর ১৯ অক্টেবার   আত্মসমপর্ন করেন।  সেই থেকে তিনি বন্দী  ছিলেন। বন্দী থাকা অবস্থায় ২০১২ সালে তার মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ২০১২ সালের ১৫ জুলাই থেকে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। একই বছর ১৬ জুলাই তিনি  ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে জামিনে মুক্তি পান। সেই থেকে তিনি গত ১২ মার্চ পযন্ত মুক্ত ছিলেন। ১২ মার্চ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন